GST

GST: উদ্দেশ্য রাজস্ব আদায় বাড়ানো, জিএসটি-তে বদল আনতে পারে কেন্দ্র

এই অবস্থায় কর আদায় বৃদ্ধিই একমাত্র পথ। সেই উদ্দেশ্যে বদলানো হতে পারে জিএসটির স্তর। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি চড়া মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে দাঁড়িয়ে আখেরে মাসুল গুনতে হবে আমজনতাকেই?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুনে। ইতিমধ্যে তা আরও বাড়ানোর দাবি উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পরোক্ষ করের হারে বদল আনতে পারে জিএসটি পরিষদ। উদ্দেশ্য, এক ঢিলে দুই পাখি মারা। এক দিকে রাজস্ব আদায় বাড়িয়ে পরিকাঠামোর জন্য টাকা জোগাড়। অন্য দিকে রাজ্যগুলির জিএসটি ক্ষতিপূরণের উপরে নির্ভরশীলতা কমানো। সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে ৫ শতাংশের করের হার তুলে দিয়ে বেশ কিছু পণ্যে চাপানো হতে পারে ৮% কর। আর কিছু পণ্যকে পাঠানো হতে পারে ৩ শতাংশের স্তরে।

Advertisement

আর এর পরেই উঠছে প্রশ্ন। ৫ শতাংশের স্তরে রয়েছে ভোজ্য তেল, মশলা, চা, কফি, চিনি, মিষ্টি, জীবনদায়ী ওষুধ, কয়লা ও প্যাকেটবন্দি পণ্যের মতো নানা জিনিস। সেগুলি যদি ৮ শতাংশে পাঠানো হয়, তা হলে জিনিসপত্রের দাম আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা। একেই পেট্রল, ডিজ়েল-সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মাথাচাড়া দেওয়ায় সাধারণ মানুষ কাহিল। বেড়েছে ওষুধ এবং যাতায়াতের খরচও। এর পরে আরও পণ্যের দাম বাড়লে তাঁদের নাভিশ্বাস উঠবে। আবার ৫ শতাংশে থাকা পণ্য ৩ শতাংশের স্তরে গেলে ধাক্কা খাবে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পরিকল্পনা। উল্টে তখন কর আদায় কমলে গুলিয়ে যাবে বাজেটের হিসাব।

জিএসটি-র আওতায় বর্তমানে ৫, ১২, ১৮ এবং ২৮ শতাংশের করের স্তর রয়েছে। কিছু পণ্য রয়েছে ছাড়ের আওতায়। কয়েকটি পণ্যে আবার ২৮ শতাংশের উপরে বাড়তি সেস বসে। সেখান থেকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় রাজ্যগুলিকে। আর সোনা, রুপো এবং সোনার গয়নায় করের হার ৩%। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বাজেটের অঙ্ক ঠিক রেখে আদায় বাড়ানোর লক্ষ্যে খাদ্যপণ্য বাদে ছাড়ের আওতায় থাকা কয়েকটি পণ্যকে ৩ শতাংশের স্তরে আনা হতে পারে। আর ৫ শতাংশে থাকা অধিকাংশ পণ্যকে পাঠানো হতে পারে ৭, ৮ অথবা ৯ শতাংশে।

Advertisement

এ নিয়ে আলোচনা চলছে। বেছে নেওয়া হবে একটি হারকে। আগামী মাসে পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে ইঙ্গিত, বেছে নেওয়া হবে ৮ শতাংশকেই।

হিসাব বলছে, ৫ শতাংশের স্তরে থাকা পণ্যগুলিতে ১% জিএসটি বাড়লে কেন্দ্রের ঘরে বছরে আসবে বাড়তি ৫০,০০০ কোটি টাকার রাজস্ব। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, জানুয়ারির পরে এপ্রিলে নতুন অর্থবর্ষ থেকে তৈরি পোশাক, ইটের মতো কিছু কিছু জিনিসে জিএসটি-র হার বদলেছে। এ দিকে, দেশে পরিকাঠামোকে পাখির চোখ করে বাজেটের অঙ্ক তৈরি করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যাতে লগ্নির জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। এমনিতে বিলগ্নিকরণ খাতে গত অর্থবর্ষে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা থাকলেও, তার ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি। চলতি অর্থবর্ষের লক্ষ্য ধরা হয়েছে অনেক কম। এই অবস্থায় জিএসটি বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই মোদী সরকারের সামনে।

তার উপরে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে জিএসটি ব্যবস্থা চালুর সময়ে বলা হয়েছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্র। গত কয়েক বছরে প্রথমে অর্থনীতির ঢিমে গতি এবং তার পরে করোনার জেরে লকডাউন ও আর্থিক কর্মকাণ্ড ধাক্কা খাওয়ায় তাদের রাজস্ব আদায় কমেছে। পাশাপাশি, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সময়ে ক্ষতিপূরণের টাকা না-দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এখন বিভিন্ন রাজ্য চাইছে ক্ষতিপূরণের মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করা হোক। কিন্তু কেন্দ্র তাতে রাজি নয়। এই অবস্থায় কর আদায় বৃদ্ধিই একমাত্র পথ। সেই উদ্দেশ্যে বদলানো হতে পারে জিএসটির স্তর। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি চড়া মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে দাঁড়িয়ে আখেরে মাসুল গুনতে হবে আমজনতাকেই?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement