Manipur

মণিপুরে ৩৫৫, কেন্দ্রের হাতে ভার নিরাপত্তার

মণিপুরের ডিজিপি ডৌঙ্গেল জানান, পরিস্থিতি বিচার করে সারা রাজ্যেই ৩৫৫ ধারা জারি হয়েছে। বিষ্ণুপুর জেলার একটি থানা থেকে অস্ত্র লুট করেছে দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৩ ০৮:৩৪
Share:

অপেক্ষা: অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে খাবারের জন্য ভিড়। হিংসা-বিধ্বস্ত ইম্ফলে। শুক্রবার। পিটিআই

অগ্নিগর্ভ মণিপুরে ৩৫৫ ধারা জারি করে রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকের ভার দেওয়া হয়েছে সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহ সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডার হিসেবে কাজ করছেন।

Advertisement

মণিপুরের ডিজিপি ডৌঙ্গেল জানান, পরিস্থিতি বিচার করে সারা রাজ্যেই ৩৫৫ ধারা জারি হয়েছে। বিষ্ণুপুর জেলার একটি থানা থেকে অস্ত্র লুট করেছে দুষ্কৃতীরা। চূড়াচাঁদপুরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে মদত দেওয়া জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর বিক্ষিপ্ত গুলির লড়াই হয়েছে। ডিজি অবশ্য বলেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তাঁর আশা। আশুতোষ জানান, ২৩টি থানাকে সবচেয়ে সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে মোতায়েন হয়েছে সেনা ও আধাসেনা। আশ্রয় শিবিরে আছেন ২০ হাজার মানুষ। মণিপুরের দু’টি ট্রেনের যাত্রাপথ কমিয়ে সেগুলিকে অসম পর্যন্ত চালানো হচ্ছে।

বিমানে দিল্লি, পঞ্জাব, ত্রিপুরা ও মুম্বই থেকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ১০৭৫ জওয়ানকে মণিপুরে আনা হয়েছে। অসমের দু’টি বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে ৪ মে রাত থেকে দফায় দফায় সেনা এনে মণিপুরে নামানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সঙ্গে একাধিক বার ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন। শাহ কর্নাটকে তাঁর নির্বাচনী সফরও বাতিল করেছেন।

Advertisement

রাজ্যে সংঘর্ষে মৃত্যুর সরকারি হিসাব দেওয়া হয়নি। বেসরকারি মতে সংখ্যাটি ১৬। জখম শতাধিক। বৃহস্পতিবার ফেরজাওল জেলার বিজেপি বিধায়ক ভুংজাংগিন ভালতের গাড়িতে উত্তেজিত জনতা আক্রমণ চালায়। অতি সঙ্কটজনক অবস্থায় বিধায়ককে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উত্তর-পূর্ব খ্রিস্টান ফোরামের জরুরি বৈঠকের পরে তাঁদের মুখপাত্র অ্যালেন ব্রুকস্ জানান, সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনী মণিপুরে দু’টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। তা হল ০৩৮৬২২৪৯১২২ ও ৮৭৯৮৯৫৯২৫৭। অসম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মিজোরাম সরকারও ছাত্রছাত্রী ও মণিপুরে থাকা ওই সব রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জানান, তাঁরা রাজ্যের প্রায় ২০০ ছাত্রছাত্রীকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছেন।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানিয়েছেন, মণিপুরে পাঠরত ত্রিপুরার ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা-সহ অন্যান্য বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে বীরেন সিংহ তাঁকে ফোনে আশ্বস্ত করেছেন। ত্রিপুরার ডিজি, মুখ্যসচিব ও অন্য শীর্ষ কর্তারা আজ বৈঠক করেছেন। মণিপুরের রিমসের অধ্যক্ষ ত্রিপুরার স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীরা সুরক্ষিত আছেন।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নৌকায় জিরি নদী পেরিয়ে মণিপুর থেকে জনজাতিদের অসমের কাছাড় জেলায় ঢোকা শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, তাঁর সরকার শরণার্থীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করবে। কাছাড় জেলায় শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ১১০০। কাছাড়ের লক্ষীপুরে পাঁচটি আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব কংগ্রেস কোঅর্ডিনেশন কমিটির দাবি, বিজেপির ডাবল-ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতাতেই জ্বলছে মণিপুর। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব মণিপুরের হিংসার জন্য নেডা-র ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement