গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
মহুয়া মৈত্র-সহ দেশের কিছু বিরোধী নেতার আইফোনে ‘রাষ্ট্রের মদতে হ্যাকিং’য়ের সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছে অ্যাপল! সেই বার্তা কেন পাঠানো হল, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্র।
মঙ্গলবার যখন অ্যাপলের ওই সতর্কবার্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে একের পর এক তোপ দাগছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধীরা, তখনই এ কথা জানান কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে তিনি পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘‘বিরোধীরা সমালোচনার অজুহাত খুঁজতে থাকেন। কেন্দ্রকে আক্রমণ করার কোনও বড় কারণ না পেয়ে এখন হ্যাকিং নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা।’’ তবে একই সঙ্গে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘অ্যাপলের ওই সতর্কবার্তা শুধু ভারতে নয়, আরও অন্তত ১৫০টি দেশে গিয়েছে। কেন ওই সতর্কবার্তা এল, তা জানতে বিশদ তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’
মঙ্গলবার সকালে আইফোন হ্যাকিং সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পাওয়ার কথা প্রথম সমাজমাধ্যমে জানান তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। পরে জানা যায়, একা মহুয়া নন, তাঁর সঙ্গে শিবসেনার মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী, কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর, আপ সাংসদ রাঘব চড্ডা, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, সিপিএম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি এবং কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপাল, পবন খেরাও অ্যাপলের থেকে ওই সতর্কবার্তা পেয়েছেন।
এর পরেই এক্স হ্যান্ডলে মহুয়া লেখেন এ-তো জরুরি অবস্থার থেকেও খারাপ পরিস্থিতি! পরে কংগ্রেস সাংসদ রাহুলও একটি সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দেগে বলেন, এ সবই আসলে বিরোধীদের তরফে আদানিকে আক্রমণের ফল। তার কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসল ক্ষমতা নিহিত রয়েছে আদানি নামের ‘তোতাপাখি’র ভিতরে। বিরোধীরা সেদিকে হাত বাড়াতেই তাঁদের হ্যাকিংয়ের সতর্কবার্তা পাঠিয়ে বেপথু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আসলে কেন্দ্র চাইছে আদানিকে আক্রমণ ছেড়ে বিরোধীরা অন্যদিকে মন দিক। যদিও কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী এই সমস্ত অভিযোগকে বিরোধীদের অকারণ সমালোচনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অশ্বিনী। বিরোধীদের কাছে আসা আইফোন হ্যাকিংয়ের সতর্কবার্তা নিয়ে সেখানেই প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে মন্ত্রী জানান, অ্যাপলের ওই বার্তার বক্তব্যের কোনও ব্যাখ্যা কেন্দ্রের কাছে নেই। ওই সতর্কবার্তার জন্য কেন্দ্রকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে বিরোধীরা। যদিও ওই বার্তা আরও অন্তত দেড়শোটি দেশে গিয়েছে। সব সময় এমন সতর্কবার্তা সত্যি হয় তা-ও নয়। এই বার্তাও সেইরকম ‘ফল্স অ্যালার্ম’ হতে পারে বলে জানান অশ্বিনী। তবে একই সঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই বার্তা কেন এল, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যাঁরা ওই সতর্ক বার্তা পেয়েছেন, তাঁরা যেন তদন্তে সহযোগিতা করেন।’’