প্রতীকী চিত্র।
কোথাও বাড়িওয়ালা চড়া ভাড়া হাঁকছেন। কোথাও আবার ভাড়াটে নামমাত্র ভাড়া দিয়ে বাড়ি দখল করে রেখেছেন। কেউ সেই ভয়ে বাড়ি ভাড়াই দিচ্ছেন না। দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ ফ্ল্যাট-বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এ দিকে অনেকেই সাধ্যের মধ্যে ভাড়া বাড়ি খুঁজে পাচ্ছেন না। এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টায় অবশেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা মডেল ভাড়াটে আইন অনুমোদন করল।
বাড়ি ভাড়ার বিষয়টি যে-হেতু রাজ্যের এক্তিয়ারে পড়ে, তাই এ বার মডেল আইন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পাঠানো হবে। রাজ্যগুলি এই মডেল আইন অনুযায়ী নতুন ভাড়াটে আইন চালু করতে পারে। অথবা পুরনো ভাড়াটে আইনে সংশোধন করতে পারে।
মডেল আইন অনুযায়ী, ভাড়াটেকে দু’মাসের ভাড়া ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ রাখতে হবে। ব্যবসায়িক কারণে ভাড়া নিলে জমা রাখতে হবে ছ’মাসের ভাড়া। ভাড়াটে অন্য কাউকে বাড়ির একাংশ ভাড়া দিতে পারবেন না। চুক্তি অনুযায়ী ভাড়াটে না-উঠলে বাড়িওয়ালা ভাড়াটের থেকে প্রথম দু’মাস দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করতে পারবেন। তার পর থেকে চার গুণ। তবে ভাড়া-বিবাদের জেরে জল সরবরাহ বা বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করা যাবে না। ভাড়া বাড়াতে হলে তিন মাস আগে নোটিস দিতে হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, বাড়িভাড়া বৃদ্ধির হার বা ঊর্ব্বসীমা নিয়ে কিছু বলা হয়নি মডেল আইনে। বাড়ির মেরামতি, রং করার দায়িত্ব বাড়িওয়ালারই থাকবে।
কেন্দ্রের আশা, বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে দেশ জুড়ে একই রকম আইনি কাঠামো তৈরি হলে অনেক ফাঁকা পড়ে থাকা বাড়িতে ভাড়াটে আসবে। ফলে এই ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবে উন্নতি হবে। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলি আবাসন তৈরি করে তা ভাড়া দেওয়ার ব্যবসাতেও লগ্নি করতে পারবে। নোট বাতিলের পর থেকে ধুঁকতে থাকা আবাসন ক্ষেত্রও এর ফলে কিছুটা চাঙ্গা হবে বলে মোদী সরকারের আশা।
কেন্দ্রীয় আবাসন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর বক্তব্য, এর ফলে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটের মধ্যে আইন মাফিক আনুষ্ঠানিক চুক্তি হবে। সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা ‘অ্যানারক’ -এর চেয়ারম্যান অনুজ পুরীর বক্তব্য, এতে বাড়িওয়ালা-ভারাটের মধ্যে আস্থার অভাব মিটবে। দু’পক্ষের দায়িত্ব স্পষ্ট হবে। কোনও বিবাদ হলে দ্রুত মীমাংসার জন্য রেন্ট কোর্ট, রেন্ট ট্রাইবুনাল তৈরি হবে। পুরীর মতে, কোভিডের সময়ই বোঝা গিয়েছে, শহরে কাজ করতে আসা পরিযায়ী শ্রমিকরা কতখানি সমস্যার মধ্যে বসবাস করেন। তাঁরাও এর ফলে শহরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবেন। সামগ্রিক ভাবে আবাসন ক্ষেত্রও এর ফলে চাঙ্গা হতে পারে।