প্রতীকী ছবি।
আধ ডজন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা সোমবারই আলোচনা করে ঠিক করেছিলেন, তাঁরা জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে মোদী সরকারের প্রস্তাব খারিজ করে দেবেন। এ বার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানাতে শুরু করলেন, জিএসটি ক্ষতিপূরণ কেন্দ্রকেই মেটাতে হবে। ক্ষতিপূরণের অর্থ রাজ্যকে ঋণ নিতে বলার প্রস্তাব তাঁরা মানছেন না। প্রয়োজনে কেন্দ্র নিজে ধার করে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিক।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, তেলঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর আইনি ও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা কেন্দ্র এড়িয়ে যেতে পারে না। তামিলনাড়ুতে এনডিএ-র শরিক এডিএমকে-র মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামীও মোদী সরকারের কাছে দাবি তুলেছেন, জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর তহবিলে টাকা না-থাকলে কেন্দ্রকেই ধার নিতে হবে। কেন্দ্রের থেকে লিখিত প্রস্তাব পাওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত ৯টি রাজ্য তা খারিজ করে দিয়েছে।
রাজ্যের এই বিদ্রোহের মুখেই আজ অর্থ মন্ত্রকের চিন্তা বাড়িয়েছে অগস্ট মাসের জিএসটি আয়। জুলাইতে প্রায় ৮৭,৪২২ কোটি টাকা আয় হয়েছিল। অগস্টে আয় ৮৬,৪৪৯ কোটি টাকা। গত বছরের অগস্টের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কম। সেস বাবদ আয় হয়েছে ৭,২১৫ কোটি টাকা।
অর্থনীতির ঝিমুনি ও লকডাউনের ধাক্কায় রাজ্যের আয় কমেছে। সেস থেকে যথেষ্ট আয় হচ্ছে না। উল্টো দিকে, জিএসটি ক্ষতিপূরণের দাবির অঙ্কও বেড়েছে। এই চাপের মুখেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দিয়েছিলেন, কেন্দ্রের পক্ষে ক্ষতিপূরণ মেটানো সম্ভব হয়। তিনি বলেছিলেন, চলতি অর্থ বর্ষে জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির মোট কম আয় হবে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৭ হাজার কোটি টাকা জিএসটি কম আদায়ের জন্য আর বাকিটা করোনার কারণে অর্থনীতির হাল খারাপ হওয়ায়। সীতারামন প্রস্তাব দেন, এই দু’টো অঙ্কের যে কোনও একটা রাজ্যগুলি ধার করুক।
ছত্তীসগঢ়ের অর্থমন্ত্রী টি এস সিংহদেও এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যগুলি একমত যে কেন্দ্রকেই ক্ষতিপূরণ মেটাতে হবে। সর্বোপরি জিএসটি পরিষদে এ বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য করেই এগোতে হবে। বিজেপির অর্থমন্ত্রীদের সংখ্যার জোরে কেন্দ্রের মত চাপিয়ে দিলে চলবে না।’’ কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক বলেন, ‘‘দেশের অর্থনীতি মন্দার মধ্যে পড়েছে। এখন বাজারের চাহিদা বাড়াতে সরকারি খরচ বাড়াতে হবে। কিন্তু কেন্দ্র ক্ষতিপূরণ দিতে নারাজ। কেন্দ্র চায় রাজ্যগুলি ১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ কাটছাঁট করুক।’’
কেজরীবাল প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছেন, কেন্দ্র জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর কোনও আইনসঙ্গত সমাধান ভাবুক। জিএসটি পরিষদ কেন্দ্রকে ধার করে ক্ষতিপূরণ মেটানোর ক্ষমতা দিক। রাজ্য ধার করতে গেলে অহেতুক বোঝা চাপবে। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেছেন, কেন্দ্রই ধার করুক। কেন্দ্রই সুদে-আসলে তা শোধ করুক। পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত বাদলও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে প্রস্তাব খারিজের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।