গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব তাঁরা পেয়েছেন, প্রাপ্তি স্বীকার করে জানাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মঙ্গলবার লোকসভায় একটি লিখিত জবাবে তারা জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রাজ্যের নাম বদলানোর প্রস্তাব এসে পৌঁছেছে তাদের কাছে। সেই প্রস্তাবে তিনটি ভাষা— বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দিতে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে বাংলা করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকেই রাজ্যের নাম বদলানোর চেষ্টা শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রথমে তিনটি ভাষায় তিনটি নামের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রকে। পরে ২০১৮ সালে তিনটি ভাষাতেই একই নাম বদলানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে দু’বারই আলাদা আলাদা কারণ দেখিয়ে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্র।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যা জানিয়েছে, তাতে অবশ্য নাম বদলের পুরনো চেষ্টার কোনও উল্লেখ নেই। তৃণমূলের এক সাংসদ সায়দা আহমেদ লোকসভায় এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। তারই জবাবে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের কথা বলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সায়দা জানতে চেয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে দেশের বিভিন্ন শহরের নাম বদলাতে চেয়ে কতগুলি প্রস্তাব এ যাবৎ জমা পড়েছে? এবং কেন্দ্র ঐতিহ্যবাদী জায়গার নাম বদলানো সংক্রান্ত নির্দেশিকায় কোনওরকম বদল এনেছে কি না। জবাবে স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লোকসভায় লিখিত ভাবেই জবাব দেন।
রাই লোকসভায় জানান, গত পাঁচ বছরে তাঁদের কাছে শহরের নাম বদলানোর যত প্রস্তাব এসেছিল তার প্রত্যেকটিতেই তারা নো-অবজেকশন অর্থাৎ ছাড়পত্র দিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এলাকার নাম বদলানোর নির্দেশিকাতেও তাঁরা কোনও বদল আনেনি। এর পরই রাই জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রাজ্যের নাম বদলানোর প্রস্তাবও এসেছে তাদের কাছে। যদিও ওই প্রস্তাব নিয়ে তারা কিছু পদক্ষেপ করেছেন কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
নামের জন্য বিভিন্ন সভায় পশ্চিমবঙ্গের নাম অনেক পরে ডাকা হয়, যা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের অন্তরায় বলে রাজ্যের নাম বদলানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে প্রথমে তিনটি ভাষায় তিনটি আলাদা নাম বদলের প্রস্তাব দেওয়া হয় কেন্দ্রকে। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা হরফে ‘বাংলা’, ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’ এবং হিন্দিতে ‘বঙ্গাল’ করা হোক। কিন্তু কেন্দ্র সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এক সাক্ষাৎকারে তার কারণও জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র একটি মাত্র নাম চেয়ে ওই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। তাই আমরা বিধানসভায় নতুন প্রস্তাব পাশ করিয়ে একটি নাম ঠিক করি এবং কেন্দ্রের কাছে জমা দিই।’’
২০১৮ সালের ২৬ জুলাই পাশ হয় ওই প্রস্তাব। কিন্তু ২০১৯-এ সেই প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়ে কেন্দ্র বলে রাজ্যের নাম বদলাতে হলে সাংবিধানিক সংশোধন প্রয়োজন।