ফাইল চিত্র।
অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডকে ভেঙে কর্পোরেট সংস্থা তৈরির প্রতিবাদে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মী সংগঠন ২৬ জুলাই থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট শুরুর পরিকল্পনা করেছিল। তাতে যোগ দিয়েছিল সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস অনুমোদিত ভারতীয় প্রতিরক্ষা মজদুর সঙ্ঘ। এই ধর্মঘট ঠেকাতে মোদী সরকার এ বার অধ্যাদেশ জারি করল।
বুধবার রাতে জারি হওয়া অত্যাবশ্যক প্রতিরক্ষা পরিষেবা অধ্যাদেশে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে ধর্মঘটকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ ধর্মঘটে যোগ দিলে এক বছর পর্যন্ত জেল বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা দুই-ই হতে পারে। কেউ ধর্মঘটে উৎসাহ বা উস্কানি দিলে, তাঁর দু’বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মজদুর সঙ্ঘ-সহ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মী সংগঠন কেন্দ্রের এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগ জানানো হবে আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা)-তেও। এআইটিইউসি-র নেত্রী অমরজিৎ কউর বলেন, ‘‘২৬ জুন জরুরি অবস্থা জারির বর্ষপূর্তিতে মোদী সরকার গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বলেছিল। তা এত দ্রুত উবে গেল!’’
২০০ বছরের পুরনো অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড ভেঙে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত মোদী সরকার গত বছরই নিয়ে ফেলেছিল। সে সময় ধর্মঘট ডেকেও কেন্দ্রের আশ্বাসে কর্মীরা পিছিয়ে যান। গত ১৬ জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বোর্ডের অধীন ৪১টি অস্ত্র কারখানার বদলে সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত স্বশাসিত কর্পোরেট সংস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কারখানা থেকেই তিন সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র, গোলাগুলি কেনা হয়। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্মী সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ২৬ জুলাই থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। ৮০ হাজার কর্মী এই সংগঠনগুলির সদস্য। কর্মীদের মূল আশঙ্কা, এর পরে কেন্দ্র এই সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ করবে। ফলে ভবিষ্যতে কর্মী ছাঁটাই হবে। ঠিক ছিল, ৮ জুলাই ধর্মঘটের নোটিস দেওয়া হবে। তার আগেই মোদী সরকার ধর্মঘটকে বেআইনি তকমা দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করল। সরকারি সূত্রের খবর, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড ভেঙে সাতটি কর্পোরেট সংস্থা তৈরির বিষয়ে বাদল অধিবেশনে বিল আসতে পারে।