রামলালার অস্থায়ী মন্দিরে পুজো দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যায় পৌঁছনোর আগের রাত থেকেই অযোধ্যার ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বলবে। তিনি অযোধ্যার হেলিপ্যাডে নেমে প্রথমে সরযূ নদীতে আচমন করবেন। এর পরে প্রথমে হনুমানগড়িতে বজরংবলীর ও তার পরে রামলালার দর্শন করবেন। তার পরেই ভূমি পূজা ও শিলান্যাস।
প্রধানমন্ত্রীর হাতে ৪০ কেজির রুপোর ইট দিয়ে রামমন্দিরের শিলান্যাসের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজে অযোধ্যা যান। এত দিন যে মাটির স্তূপের উপর তাঁবু খাটিয়ে রামলালার পুজো হত, সেই টিলা ও তার সংলগ্ন জমি এখন সমতল করে ফেলা হয়েছে। সেখানেই রামমন্দির তৈরি হবে। এখন যে অস্থায়ী মন্দিরে রামলালার পুজো হচ্ছে, সেখানে গিয়ে এ দিন পুজো করেন আদিত্যনাথ। প্রথমে তিনি হনুমানজির মন্দিরে যান। রামজন্মভূমি আন্দোলনের পর থেকেই অযোধ্যার করসেবকপুরমে পাথর কেটে কেটে রামমন্দিরের স্তম্ভ তৈরি চলছিল। তা দেখে যোগী রাম জন্মভূমি ন্যাসে গিয়ে সাধুসন্ত, পুলিশ, প্রশাসনের পদাধিকারী, স্থানীয় সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
গত চার দিন ধরে আরএসএসেরও শীর্ষ নেতাদের বৈঠক চলছিল। সেখানেও বৈঠকের মূল বিষয় ছিল রামমন্দির। করোনার বিধিনিষেধ মেনেও কী ভাবে রামমন্দিরের ভূমি পূজাকে বিরাট মাত্রায় পৌঁছে দেওয়া যাওয়া যায়, তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়। অযোধ্যায় যোগী বলেন, ‘‘৪ ও ৫ অগস্ট রাতে অযোধ্যায় দীপোৎসব হবে। রাম জন্মভূমি ন্যাসের প্রয়াত প্রধান রামচন্দ্র পরমহংসের আত্মা শান্তি পাবে। তাঁর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে। আমরা অযোধ্যাকে ভারত ও গোটা বিশ্বের গর্বের বিষয় হিসেবে তুলে ধরব।’’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভবনে ধর্নার হুমকি গহলৌতের
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড-টিকা ট্রায়ালে সায় চেয়ে আবেদন
শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী যে দিন রামমন্দিরের কাজ শুরু করে পুজো করবেন, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ঐতিহাসিক দিন হবে তা। দূরদর্শনে সরাসরি অনুষ্ঠানের সম্প্রচার হবে। কিন্তু একইসঙ্গে সাধুসন্তরা যাতে অযোধ্যায় না-এসে নিজের মঠ-মন্দির-আশ্রমেই বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে পূজার্চনা করেন, তার জন্যও আবেদন জানিয়েছে ট্রাস্ট। বিজেপির শীর্ষনেতাদের কাকে কাকে অযোধ্যায় আমন্ত্রণ জানানো হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। রামমন্দির আন্দোলনের অন্যতম চরিত্র, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী আজ বলেছেন, ‘‘আমাকে যদি ফাঁসিও দেওয়া হয়, আমি তার জন্য নিজেকে ধন্য মনে করব।”
ঘটনাচক্রে অযোধ্যায় ভূমি পূজার দিনেই জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ রদের বর্ষপূর্তি। বিজেপি সে দিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর থেকে ‘এক ভারত, একাত্ম ভারত’ কর্মসূচি শুরু করছে। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা নিজে দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি বুথে এই প্রচার পৌঁছে দিতে হবে। কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফেও জাতীয় স্তরে প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হবে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে পতাকা উত্তোলন হবে। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়নার মতে, যে পাঁচিল বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্ম দিয়েছিল, তা এখন মাটিতে মিশে গিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর এখন ভারতের অভিন্ন অঙ্গ।