ফুটেজটি প্রকাশ্যে আসার পরে পুলিশ নিশ্চিত, গত ৯ এবং ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী রাতে খুন করা হয় নিক্কিকে
নিক্কি হত্যাকাণ্ডে অনেকেই শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া দেখছেন। এ বার সেই নিক্কির শেষ মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া ওই ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, দিল্লির ভাড়া বাড়ির সিঁড়়ি দিয়ে উপরে উঠছেন তিনি। তাঁকে খুন করায় অভিযুক্ত শাহিল গহলৌতের বয়ানের সঙ্গে সিসি ক্যামেরায় ওঠার সময়কে মেলালে বোঝা যায়, এর ঠিক পরেই খুন করা হয় নিক্কিকে। ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে।
পাঁচ বছরের প্রেম। তার পর একত্রবাস। ২২ বছরের নিক্কি ভাবতেও পারেননি, এর পরও তাঁর প্রেমিক একটি বিয়ে করতে পারেন তাঁকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে। খবরটা পেয়ে তাই চমকে গিয়েছিলেন। ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর গোয়া যাওয়ার কথা ছিল। ওই দিনই নাকি প্রেমিকের বিয়ে। শুনে গোয়া যাওয়ার পরিকল্পনাই বাতিল করে দিয়েছিলেন ২২ বছরের তরুণী। ১০ তারিখের সেই বিয়ে অবশ্য বাতিল হয়নি। নিক্কির প্রেমিক সাহিল আগের দিন রাতে তাঁর একত্রবাসের সঙ্গীকে খুন করে চলে যান বিয়ে করতে। বুধবার এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছেন নিক্কির বাবা। ঘটনাচক্রে সিসি ক্যামেরায় ওঠা অসম্পাদিত ভিডিয়োটিও ৯ ফেব্রুয়ারির।
মঙ্গলবার নিক্কির দেহ দিল্লির নজফগড়ের একটি ধাবার ফ্রিজের ভিতর খুঁজে পায় পুলিশ। তার পরেই তাঁর বাবাকে ডেকে পাঠানো হয় দেহ শনাক্তকরণের জন্য। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিক্কির বাবা বলেছেন, মেয়ে যে কারও সঙ্গে একত্রবাসের সম্পর্কে রয়েছেন, তা জানতেনই না তিনি। তাঁর কাছে সাহিলের ফোন নম্বর ছিল। নিক্কির বন্ধু হিসাবেই সাহিলকে চিনতেন তিনি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি সাহিলকে ফোন করেন নিক্কির বাবা। মেয়েকে ফোনে না পেয়েই ওই ফোন করেছিলেন। কিন্তু সাহিল তাঁকে সব জেনেশুনে ভুল পথে চালিত করেন বলে দাবি করেছেন নিক্কির বাবা। ওই সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘সাহিল আমাকে বলে, নিক্কি বন্ধুদের সঙ্গে দেহরাদূন-মুসৌরিতে ঘুরতে চলে গিয়েছে। তবে ফোন ফেলে গিয়েছে সাহিলের কাছে। এমনকি, সাহিল এ কথাও বলেছিল যে, ‘আমারও যাওয়ার ইচ্ছে ছিল ওদের সঙ্গে। কিন্তু আমার বিয়ে, তাই যেতে পারিনি’।’’ সাহিলের কথায় তখন বিশ্বাসই করেছিলেন নিক্কির বাবা। এখন সব ঘটনা জানার পর সাহিলের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন নিক্কির বাবা। বলেছেন, ‘‘আমি চাই, ওকে ফাঁসিতে ঝোলানো হোক।’’
ফুটেজটি প্রকাশ্যে আসার পরে পুলিশ নিশ্চিত, গত ৯ এবং ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী রাতে খুন করা হয় নিক্কিকে। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন পনেরো আগেই মেয়ে এসেছিল হরিয়ানায়, নিজের বাড়িতে। নয়ডার গালগোটিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্মানিক ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন নিক্কি। থাকছিলেনও সেখানেই। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, শেষ বার মেয়েকে বাড়িতে দেখে তাঁর এক বারও মনে হয়নি, তিনি দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। তবে তিনি এ কথা জানতেন না যে, নিক্কি তাঁর বন্ধু সাহিলের সঙ্গে একত্রে থাকেন।