মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার হলে ধরা পড়লে কড়া শাস্তি। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা নিয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)। পরীক্ষার হলে কোনও পরীক্ষার্থী বৈদ্যুতিন যন্ত্র (মূলত মোবাইল ফোন) নিয়ে ধরা পড়লে তার ওই বছরের গোটা পরীক্ষাই বাতিল করা হবে। শুধু ওই বছর নয়, পরের বছরেও বোর্ডের পরীক্ষা দিতে পারবে না ওই পরীক্ষার্থী। অর্থাৎ তার দু’বছর নষ্ট হবে। সিবিএসই বোর্ডের অধীনে থাকা স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা একে ‘ইতিবাচক’ বলেই মনে করছেন। যদিও রাজ্য বোর্ডের অধীনে থাকা এক স্কুলের শিক্ষিকার আশঙ্কা, এর প্রভাব পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের উপর পড়তে পারে।
সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে সিবিএসই। সেখানে বোর্ডের তরফে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য কড়া পদক্ষেপ করার কথা জানানো হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে ধরা পড়লে ওই বছরের সব পরীক্ষা বাতিল করা হবে। পরের বছরও পরীক্ষায় বসতে পারবে না ওই পড়ুয়া। যে সকল পড়ুয়া পরীক্ষা নিয়ে গুজব ছড়াবে, তাদের জন্যও একই পদক্ষেপ করবে সিবিএসই বোর্ড। পাশাপাশি, বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, যে সব ঘরে পরীক্ষা চলবে, সেখানে সিসি ক্যামেরা থাকা বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে ওই সিসিটিভি ফুটেজের উপর নজরদারি চালাবেন সহকারী সুপারিনটেন্ডেন্ট।
সিবিএসই বোর্ডের অধীনে থাকা স্কুলগুলিকে পরীক্ষার এ সব নিয়মকানুন পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবক এবং পরীক্ষকদেরও ভাল ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। পড়ুয়ারা যাতে কোনও ভাবে পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে না যায়, সে কথা তাদের বার বার মনে করানোর কথাও বলেছে বোর্ড। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সিবিএসই বোর্ডের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ বছর পরীক্ষা দিচ্ছে ৪৪ লক্ষ পড়ুয়া।
সিবিএসই-র অধীনে থাকা দিল্লি পাবলিক স্কুল (ডিপিএস), ডোমজুড়ের প্রিন্সিপাল সুনীতা অরোরা এই নির্দেশিকাকে বোর্ডের ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করেছেন। তাঁর মতে, পড়ুয়াদের চিন্তার বিকাশ ঘটাতে এই ধরনের পদক্ষেপ অন্তত প্রাসঙ্গিক। তিনি আরও বলেন, ‘‘পরীক্ষার সময় অনৈতিক ভাবে কেউ উত্তর লিখলে তা মেধা যাচাইকরণের পদ্ধতিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। সিবিএসই শুরু থেকেই এই বিষয়গুলিকে কখনও সমর্থন করেনি। দু’বছর পরীক্ষা দিতে না দেওয়ার এই শাস্তি পড়ুয়াদের এই ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখবে।’’
এ রাজ্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে টোকাটুকি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হলেও গোটা পরীক্ষা বাতিল করা হয় না। সিবিএসই-র এই পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যোধপুর পার্ক গার্লস স্কুলের সহ-প্রধানশিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সব সময় পড়ুয়াদের প্রতি সহানুভূতিশীল। আমরা পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে চেষ্টা করি। যদি তাদের বছর নষ্ট হয়, তা হলে তার প্রভাব তাদের ভবিষ্যতের উপর পড়বে। দু’বছর নষ্ট হলে পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে পারে।’’