রাজীব কুমার মামলার রায় স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র
কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্য সিবিআইয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে রায় ঘোষণা স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট।
এর আগে শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জেরা করার রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে আদালতকে জমা দিয়ে সিবিআই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার প্রয়োজন আছে বলে জানায়। সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান, রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্ট যে রক্ষা কবচ দিয়েছে তা যেন প্রত্যাহার করা হয়।
তুষার মেটা জানান, রাজীব কুমার রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর অন্যতম প্রধান আধিকারিক ছিলেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই সারদা তদন্তে নেমে একাধিক প্রমাণ পেয়েছে যেখানে স্পষ্ট তাঁর নির্দেশেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যায় সিট। সিবিআই তাদের হলফনামায় অভিযোগ জানায়, রাজীব কুমারের নির্দেশেই সারদা তদন্তের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছে পুলিশ। তার মধ্যে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডস যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে পেন ড্রাইভ এবং টাকা লেনদেনের ডায়েরির মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তুষার মেটা বলেন, ‘‘রাজীব কুমার শিলংয়ে জেরার সময় কার্যত কোনও সহযোগিতা করেননি তদন্তকারীদের সঙ্গে। টানা পাঁচ দিনের জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তিনি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। আর সেই কারণেই তাঁর মতো প্রভাবশালী পুলিশ কর্তাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন।’’
সিবিআইয়ের আবেদনের ভিত্তিতে রাজীব কুমারকে হলফনামা পেশ করতে বলে আদালত। তারা সিবিআইকেও জানায়, শুধু হলফনামা নয় উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে সন্তুষ্ট করতে হবে আদালতকে। তার ভিত্তিতে সিবিআই বুধবার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে নিজেদের দাবির সপক্ষে ‘প্রমাণ’ তুলে দেয় আদালতে। পাল্টা রাজ্য সরকারও হলফনামা পেশ করে।
আরও পডু়ন: এখানে এক জন গদ্দার ছিল, তাঁকে টিকিট দিইনি, ভাটপাড়ায় দাঁড়িয়ে অর্জুনকে তোপ মমতার
আরও পড়ুন: মাত্র ৪০০ কিমি দূরে ফণী, ওড়িশা উপকূল থেকে সরানো হল ৮ লক্ষেরও বেশি মানুষকে
রাজ্য সরকার তাঁদের হলফনামায় জানিয়েছে, রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আবেদন পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। রাজ্য সরকারের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভি বলেন,‘‘ গোটাটাই একটা রাজনৈতিক খেলা।” রাজ্য সরকার এবং রাজীব কুমারের পেশ করা হলফনামায় অভিযোগ করা হয়, যেহেতু কলকাতা পুলিশ এক শীর্ষ সিবিআই কর্তার স্ত্রী এবং মেয়ের চিটফান্ডে যোগাযোগ নিয়ে তদন্ত করছে, সে কারণেই প্রতিহিংসা বশত ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে রাজীব কুমারকে।
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত রাজীব মামলায় দু’পক্ষের বয়ান শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছে। তিন বিচারপতির বেঞ্চ দু’পক্ষের জমা দেওয়া হলফনামা এবং তথ্য প্রমান খতিয়ে দেখে রায়দান করবেন বলে আদালত সূত্রে খবর।