মহুয়া মৈত্র। — ফাইল চিত্র।
বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে লোকপালের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
১৯ মার্চ মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল। বরখাস্ত তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করা হয় লোকপালের নির্দেশিকায়। সেখানে মহুয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা সিবিআইকে ২০(৩-এ) ধারার অধীনে অভিযোগের সমস্ত দিক নিয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দিচ্ছি। এই নির্দেশ পাওয়ার দিন থেকে ছ’মাসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। সেই সঙ্গে সিবিআই প্রতি মাসে তদন্তের অগ্রগতির পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদনও দাখিল করবে।’’
গত বছর নভেম্বরে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে দাবি করেছিলেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রশ্ন-ঘুষকাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে লোকপাল। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল না লোকপালের তরফে। লোকসভা ভোটের আগেই তা করা হল। প্রসঙ্গত, আসন্ন লোকসভা ভোটে মহুয়াকে তাঁর পুরনো কেন্দ্র কৃষ্ণনগরে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। নিশানা করেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানিকে। অভিযোগ, সবটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য। এই অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবি তোলেন নিশিকান্ত। তার আগে মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই বিভিন্ন অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।
পরে হীরানন্দানি নিজেই হলফনামা দিয়ে জানান, মহুয়ার সংসদের লগ ইন আইডি জেনে তাতে প্রশ্ন টাইপ করতেন তিনি। তবে ঘুষের অভিযোগ মানেননি। নিজের লগ ইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ মানেননি মহুয়াও। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর বক্তব্য না শুনেই লোকসভার এথিক্স কমিটি তাঁকে একতরফা ভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। গত ৮ ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত লোকসভায় পাশ হয়ে যায়।
ঘুষ নিয়ে প্রশ্নকাণ্ডে সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন মহুয়া। সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে লোকসভার সচিবালয়। সুপ্রিম কোর্টের নোটিসের উত্তরে গত ১২ মার্চ লোকসভার সচিবালয় জানিয়েছে, সংবিধানের ১২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনসভার অভ্যন্তরীণ কর্মপদ্ধতিতে বিচারবিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।