—প্রতীকী চিত্র।
সাইবার জালিয়াতি চক্রের পাণ্ডাদের এখন অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠেছে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ধরনের অভিযোগ উঠে এসেছে। কলকাতাতেও সম্প্রতি এই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। সাইবার জালিয়াতেরা এই ধরনের প্রতারণার ক্ষেত্রে তাদের শিকারের জন্য ফাঁদ পাতে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে। কোনও তদন্তকারী সংস্থার অফিসার পরিচয় দিয়ে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারের কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ধরা পড়েছে। এর পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হয়। সম্প্রতি একের পর এক এই ধরনের অভিযোগ উঠে আসায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকারও। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে একটি অ্যাডভাইজ়রি জারি করে জানানো হয়েছে, পুলিশ, সিবিআই, ইডি, কাস্টমস বা বিচারকের পরিচয়ে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে কাউকে গ্রেফতার করা যায় না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার থেকে প্রকাশ করা হয়েছে অ্যাডভাইজ়রিটি। এই ধরনের ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ এক ধরনের দুর্নীতি বলে ব্যাখ্যা করেছে তারা। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে অ্যাডভাইজ়রিতে বলা হয়েছে, “কেউ অযথা আতঙ্কিত হবেন না । সজাগ থাকুন। সিবিআই, পুলিশ, কাস্টমস, ইডি কিংবা বিচারক— কেউই ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে গ্রেফতার করতে পারেন না।” অ্যাডভাইজ়রিতে হোয়াটসঅ্যাপ বা স্কাইপির মতো কিছু সমাজমাধ্যমের লোগোও ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে সমাজমাধ্যম ব্যবহার করেই এই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছে।
কেউ এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হলে একটি সরকারি হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০-এ ফোন করে কিংবা সাইবার অপরাধ দমন সংক্রান্ত সরকারি ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানানোরও পরামর্শ দিয়েছে অধীনস্থ ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন সমাজমাধ্যমগুলি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, সমাজমাধ্যমগুলিও জানিয়েছে তারা তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ রাখছে। পাশাপাশি এই ধরনের অপরাধগুলি বন্ধ করতে সমাজমাধ্যমের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’-র ফাঁদে ফেলা হয়েছিল কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলাকেও। গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে তাঁর থেকে লক্ষাধিক টাকা চাওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হলে, কলকাতা পুলিশ একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করেছিল। গত মাসেই মধ্যপ্রদেশের এক বৈজ্ঞানিককে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’র ভয় দেখিয়ে ৭১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। একের পর এক ঘটনায় এ বার অ্যাডভাইজ়রি জারি করল ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার।