Tuticorin Custodial Deaths

তুতিকোরিনে পুলিশি অত্যাচারে বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় ৯ জনকে চার্জশিট সিবিআইয়ের

সিবিআই জানিয়েছে, আপাতত ন’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলেও ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের তালিকায় আরও পুলিশ আধিকারিকের নাম রয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:৩৪
Share:

পি জয়রাজ এবং তাঁর ছেলে জে বেনিক্স। —ফাইল চিত্র।

পুলিশি হেফাজতে নৃশংস অত্যাচারের জেরে মৃত্যু হয়েছিল বাবা-ছেলের। অভিযোগ উঠেছিল তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনের থানার একাধিক আধিকারিক, কনস্টেবল ও সাব-ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে। গত জুনের ওই ঘটনায় তামিলনাড়ুর পাশাপাশি উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের শাস্তির দাবিতে ক্রমাগতই চাপ তৈরি হচ্ছিল রাজ্য সরকারের উপর। শেষমেশ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই কে পলানীস্বামী। শনিবার সেই মামলায় অভিযুক্ত ন’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল সিবিআই

Advertisement

সিবিআই জানিয়েছে, চার্জশিটে নাম রয়েছে সান্থনকুলম থানার প্রাক্তন আধিকারিক এস শ্রীধর, দু’জন সাব-ইনস্পেক্টর কে বালকৃষ্ণণ এবং পি রঘুগণেশ, দু’জন হেড কনস্টেবল এস মুরুগন এবং এ সামাদুরাই, চার জন কনস্টেবল এম মুথুরাজা, এস চেল্লাদুরাই, এক্স টমাস ফ্রান্সিস এবং ভিয়িল মুথুর। তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, খুন, বেআইনি ভাবে আটকে রাখা, তথ্যপ্রমাণ লোপ এবং পুলিশি হেফাজতে মৃত বাবা ও ছেলেকে ভুয়ো মামলায় আনার ফাঁসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এই চার্জশিটে প্রয়াত সাব-ইন্সপেক্টর পলদুরাইয়ের নাম না থাকলেও সিবিআইয়ের দাবি, গোটা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন তিনিও। গত জুলাইতে পলদুরাইকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। জেলবন্দি থাকাকালীন কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

লকডাউনের সময় তুতিকোরিনের একটি থানার লকআপে পুলিশি অত্যাচার চলেছিল পি জয়রাজ নামে মোবাইলের এক দোকানি ও তাঁর ছেলে জে বেনিক্স (৩১)-এর উপর। অভিযোগ, কার্ফু শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের মিনিট পনেরো পরেও মোবাইলের দোকান খোলা রেখেছিলেন জয়রাজ। তা নিয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে জয়রাজের। পরের দিন জয়রাজকে তুলে নিয়ে যান সান্থনকুলম থানার সাব-ইনস্পেক্টর বালকৃষ্ণণ ও তাঁর সঙ্গের পুলিশকর্মীরা। এর পর থানায় গেলে জয়রাজের ছেলে বেনিক্সকেও আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ১৯ জুন তাঁদের গ্রেফতার করে কোভিলপট্টি উপ-সংশোধনাগারে রাখা হয়। সেই রাতে তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার চলে বলে অভিযোগ। পুলিশি অত্যাচারের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়লে ২২ জুন দু’জনকে কোভিলপট্টি সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সে রাতেই মারা যান জয়রাজ। পরের দিন সকালে মৃত্যু হয় বেনিক্সের।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রণবের রেট্রোস্পেক্টিভ কর তত্ত্বে ধাক্কা, মোদী কি স্বস্তিতে

ওই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রবল জনরোষ তৈরি হয়। তামিলনাড়ু ছাড়াও গোটা দেশ জুড়ে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি উঠে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সিবিআইকে তদন্তভার দেয় তামিলনাড়ু সরকার। সিবিআইয়ের একটি বিশেষ দল তামিলনাড়ুতে গিয়ে তদন্ত শুরু করে।

আরও পড়ুন: বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেন মুকুল রায়

এ দিন সিবিআইয়ের মুখপাত্র আর কে গৌর বলেন, “তদন্তের স্বার্থে মাদুরাইতে গিয়ে শিবির করেছিল সিবিআই।” অতিমারির সময় তদন্ত চালাতে গিয়ে ওই বিশেষ দলের ন’জন করোনাতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন গৌর। চার্জশিটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তদন্তের পর জানা গিয়েছে সান্থনকুলম থানায় দু’দিন ধরে অত্যাচার চলেছিল বাবা-ছেলের উপর। সেই সময় আঘাতের থেকেই মারা যান জয়রাজ এবং বেনিক্স।”

সিবিআই জানিয়েছে, আপাতত ন’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলেও ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের তালিকায় আরও কয়েক জন পুলিশ আধিকারিকের নাম রয়েছে। সেই সন্দেহভাজনদের নাম প্রকাশ না করলেও তদন্তকারীদের দাবি, “গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাঁরা শুধু যে প্রমাণ লোপের চেষ্টা করেছেন, তা নয়। সেই সঙ্গে জয়রাজ ও বেনিক্সের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলাও রুজু করেছিলেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement