দূষণে দিল্লিতে ফের বন্ধ স্কুল
বায়ুদূষণের কারণে দিল্লি এবং লাগোয়া শহরগুলিতে স্কুল ও কলেজ-সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলল বাতাসের মান নির্ণায়ক কেন্দ্রীয় কমিশন (সিএকিউএম)। ফলে কোভিড-পর্বের মতোই আপাতত শুধুমাত্র অনলাইনে পড়াশোনা হবে রাজধানীতে।
আজ দিল্লিতে বায়ুদূষণের সূচক ছিল ৩৩১ অঙ্কে। অর্থাৎ বাতাস এখনও ‘অত্যন্ত খারাপ’। দূষণে রাজধানীর অবস্থা দেখে আজ উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক ডাকার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সিএকিউএমের সেই বৈঠকে এ দিন দিল্লি ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার মুখ্যসচিবেরা উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকেই দিল্লি-সহ জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (এনসিআর)-এ বায়ুদূষণ কমাতে অন্তত সপ্তাহান্তে লকডাউন করার প্রস্তাব দিয়েছিল দিল্লি সরকার। তাতেও দূষণ না কমলে টানা সাত দিন লকডাউনের কথা ভাবতে বলেছিল অরবিন্দ কেজরীবাল প্রশাসন।
আজ মধ্যরাতের একটু আগে ন’পাতার নির্দেশিকা দিয়ে স্কুল-কলেজে পড়ুয়াদের হাজির করে ক্লাস করানো বন্ধ রাখতে বলে সিএকিউএম। এনসিআর-এর অন্তর্ভুক্ত রাজ্যগুলিকে (দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ) বলা হয়, তাদের সরকারি কর্মীদের অন্তত ৫০ শতাংশ যেন ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজ করেন। বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও তাদের অন্তত ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করানোর বিষয়ে উৎসাহ দিতে বলে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এই সাব-কমিটি। কেউ রাস্তায় আবর্জনা বা নির্মাণসামগ্রী জড়ো করলে কড়া জরিমানা করতে বলা হয়েছে। রেল, মেট্রো, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাজ বাদ দিয়ে সমস্ত নির্মাণ ও ইমারত ভাঙার কাজ ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। জরুরি পণ্য পরিবহণ ছাড়া রাজধানীতে ট্রাক ঢোকা বন্ধ করা হয়েছে ওই তারিখ পর্যন্ত। ১০ এবং ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়ি আপাতত রাস্তায় নামতে পারবে না। দূষণ সংক্রান্ত কাগজপত্র ছাড়া কোনও গাড়ি রাস্তায় বার করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এনসিআর-এ অবস্থিত ১১টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র পাঁচটি আপাতত সচল থাকবে।
গত কাল সুপ্রিম কোর্টে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা একটি গবেষণার পরিসংখ্যান তুলে দাবি করেন, শীতকালে দিল্লির দূষিত বাতাসে যে ক্ষতিকর সূক্ষ্ম ভাসমান কণা (পিএম-২.৫) থাকে, তার জন্য কৃষিজমির আগাছা পোড়ানো ধোঁয়া কেবল ৪ শতাংশ দায়ী। আজ দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই বলেছেন, ‘‘ওই রিপোর্টে আসলে বলা হয়েছে, আগাছা পোড়ানো ধোঁয়া দিল্লির দূষণের জন্য ৪ থেকে ৪০ শতাংশ দায়ী। আংশিক সত্য দেখিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করেছে কেন্দ্র।’’ এ দিকে, বিয়ের ভরা মরসুমে লকডাউন হলে ব্যবসার ক্ষতির পাশাপাশি বহু মানুষ কাজ হারাবেন বলে জানিয়ে কেজরীবালকে চিঠি লিখেছেন বণিক সংগঠন ‘চেম্বার অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ (সিটিআই)-এর চেয়ারম্যান ব্রিজেশ গয়াল।