বিহারের বক্সারের রেলস্টেশনে করোনা পরীক্ষার ভয়ে যাত্রীদের দৌড়।
প্ল্যাটফর্ম চত্বর ছেড়ে ‘পড়ি কি মরি’ দৌড়োচ্ছেন শ’য়ে শ’য়ে যাত্রী। কেউ ছোট্ট বাচ্চার হাত ধরে। কেউ বা সঙ্গে থাকা ব্যাগ-বাক্স সামলে কোনওমতে বাইরে বের হতে পারলে বাঁচেন। ভিড়ের ধাক্কায় হাতছাড়া হচ্ছে জিনিসপত্র, তবু হুঁশ নেই। ফিরে এসে নেওয়ার তাগিদও নেই। কোনও মতে প্ল্যাটফর্ম ছাড়তে পারলেই যেন স্বস্তি। ঘটনাস্থল, বিহারের বক্সারের রেলস্টেশন। দৌড়ের কারণ, করোনা পরীক্ষা।
রাজ্যের বাইরে থেকে বিহারে আসা রেলযাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করানোর কথা দিন ক’য়েক আগেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সময়ে যাঁরা রাজ্যে ফিরছেন, তাঁদের জন্যই মূলত এই পরীক্ষা। তাঁদের মাধ্যমে যাতে বিহারে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেয় বিহার প্রশাসন। যদিও সে চেষ্টায় গত কয়েকদিনে তেমন সুফল মেলেনি। কারণ পরীক্ষা হবে শুনলেই উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে পালাচ্ছেন যাত্রীরা। স্টেশন চত্বরে করোনা পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, ‘‘এটাই প্রতিদিনেরই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যদি জোর করে ওঁদের থামিয়ে পরীক্ষা করার কথা বলি, তাহলে ওঁরা ঝগড়া করতে শুরু করেন। আপত্তি করেন।’’
গত বৃহস্পতিবার একদিনে ৬২৫৩জন আক্রান্ত হয়েছে বিহারে। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। এরই মধ্যে দেশের অন্যান্য রাজ্যে জীবিকার প্রয়োজনে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরা বিহারে ফিরতে শুরু করায় চিন্তায় পরেছিল প্রশাসন। বিশেষ করে মুম্বই, পুণে, দিল্লির মতো রাজ্যে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছে। আর বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি বড় অংশ এই তিন শহরে কর্মরত। সংক্রমণ
ঠেকাতে তাই শুক্রবারই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রেলস্টেশনগুলিতে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেন নীতীশ। তবে সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি এখনও পর্যন্ত।