—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সঙ্গীকে ‘ভূত’ বা ‘পিশাচ’ বলে সম্বোধন করা ‘নিষ্ঠুরতা’ নয়। ঝাড়খণ্ডের এক পিতা-পুত্রের করা মামলার শুনানি চলাকালীন এমনটাই পর্যবেক্ষণ পটনা হাই কোর্টের। ঝাড়খণ্ডের বোকারোর বাসিন্দা নরেশকুমার গুপ্তর বিয়ে হয়েছিল বিহারের নওয়াদার এক মহিলার সঙ্গে। কিন্তু ১৯৯৪ সালে নরেশ এবং তাঁর বাবা সহদেব গুপ্তের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন নরেশের স্ত্রী। নরেশের প্রাক্তন স্ত্রীর দাবি ছিল, নরেশ এবং তাঁর বাবা সহদেব গুপ্ত তাঁকে ‘ভূত’ এবং ‘পিশাচ’-এর মতো ‘অশ্লীল’ ভাষায় গালিগালাজ করতেন।
সেই মামলা পরে নওয়াদা থেকে নালন্দা জেলা আদালতে স্থানান্তরিত হয়। ২০০৮ সালে সেই আদালতে নরেশ এবং সহদেবকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছিল। এর পর তাঁরা অতিরিক্ত দায়রা আদালতে আবেদন করলে ১০ বছর পর সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়। এর মধ্যেই ঝাড়খণ্ড হাই কোর্ট দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদে সিলমোহর দেয়। এর পর নালন্দা আদালতের গ্রেফতারির রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পটনা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সহদেব এবং নরেশ।
সেই মামলারই শুনানি চলছিল পটনা হাই কোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধরির এজলাসে। মামলার শুনানি চলাকালীন নরেশের প্রাক্তন স্ত্রীর আইনজীবীর মন্তব্য ছিল, ‘‘একবিংশ শতাব্দীতে এক জন মহিলাকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে ভূত এবং পিশাচ বলে ডাকা হত। যা নিষ্ঠুরতার উদাহরণ।’’ যদিও আদালতের পর্যবেক্ষণ, এমন যুক্তি মেনে নেওয়ার কোনও জায়গা নেই। বিচারপতি চৌধরি বলেন, ‘‘বিয়ের সম্পর্কে, বিশেষ করে ব্যর্থ বিয়েতে স্বামী এবং স্ত্রী, উভয়েরই পরস্পরকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করার নজির রয়েছে। তবে, এই ধরনের সমস্ত অভিযোগকে নিষ্ঠুরতা বলা যায় না।’’ এর পর নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দেয় বিচারপতি চৌধরির সিঙ্গল বেঞ্চ।