ছবি পিটিআই
কখনও শোনা যাচ্ছে, জাহাজ ভর্তি চিনা পণ্য বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখতে তা আটকেছেন শুল্ক দফতরের আধিকারিকেরা। আবার কখনও ব্যবসায় চিনা পণ্য বয়কটের জন্য দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের আহ্বান জানাচ্ছে খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি। লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে ভারত-চিনের সেনা অফিসারেরা যতই বৈঠকে বসুন, এ দেশের রাস্তায় পড়শি মুলুকের পণ্য বয়কটের ডাক স্তিমিত হওয়ার লক্ষণ এখনও পর্যন্ত নেই।
এই আবহেই কর্মী সংগঠন এআইটিইউসি-র অভিযোগ, বিপর্যস্ত অর্থনীতি আর শ্রমিকদের দুর্দশা থেকে নজর ঘোরাতেই আসলে এই পণ্য বর্জনের ‘নাটকে’ পরোক্ষে উৎসাহ জোগাচ্ছে মোদী সরকার।
এর আগে চিনা পণ্য বর্জনের দাবিতে দিল্লির রাস্তায় ওই পড়শি মুলুকের জিনিসপত্র ডাঁই করে পুড়িয়েছে সিএআইটি। আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে রিলায়্যান্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানী, আদানি গোষ্ঠীর গৌতম আদানি, রতন টাটা-সহ দেশের প্রথম সারির ৫১ জন শিল্পপতিকে নিজেদের ব্যবসায় চিনা কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি বা পণ্য ব্যবহার না-করার আর্জি জানায় তারা। ই-কমার্সের পোর্টালে পণ্যের গায়ে তার উৎসস্থল লেখা বাধ্যতামূলক করায়, ওই সংগঠন অভিনন্দন জানায় কেন্দ্রকে। চিনা পণ্য বিরোধী নীতি এখনও জোরালো সরকারের অন্দরে। একাধিক মন্ত্রক ও দফতর চিনা পণ্য বয়কটের কথা বলেছে।
রয়টার্সের খবর, এ দিন চিনা পণ্যে বোঝাই জাহাজ আটকে তার পণ্য বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখেছেন শুল্ক আধিকারিকেরা। অনেকের আশঙ্কা, এর পাল্টা হিসেবে কর বসিয়ে ওষুধের কাঁচামালের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে চিন। ভারতে ওষুধের কাঁচামালের ৭০-৭৫% আসে ওই দেশ থেকে।
আরও পড়ুন: বেসরকারি সংস্থাকে আকাশ ছোঁয়ার ছাড়
চিনা পণ্য বয়কটের ডাককে নিছকই ‘লোক-দেখানো’ বলে মনে করছেন এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউর। তাঁর প্রশ্ন, “কোন দেশের পণ্যে কেমন শুল্ক বসানো হবে তা তো সরকারের হাতে। মোদী সরকার যদি চিনা পণ্য সত্যিই আটকাতে চায়, তা তো প্রতিফলিত হওয়ার কথা তাদের নীতিতে। তার বদলে কিছু দিন আগে পর্যন্তও বিভিন্ন প্রকল্পে বরাত পেয়েছে নানা চিনা সংস্থা। গুজরাতে বল্লভভাই পটেলের বিশাল মূর্তি গড়তে ডাক পড়েছে চিনাদের। আত্মনির্ভরতার কথা বলে পরিকল্পনা করা হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণের!”