— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এ বার বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে। কংগ্রেস বা অন্য কোনও বিরোধী দলের তরফে নয়। এই অভিযোগ সিএজির রিপোর্টে! এই ‘অনিয়মের’ কথা প্রকাশ্যে আসতেই বাংলার শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, “এ বার নিশ্চয় মধ্যপ্রদেশের টাকাও বন্ধ করে দেবে কেন্দ্র?”
সিএজি রিপোর্ট উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার অন্তত দেড় হাজার ‘অযোগ্য’ ব্যক্তিকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় ১৫ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। আর্থিক ভাবে আরও পিছিয়ে থাকা তফসিলি জাতি-জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত গ্রামবাসীদের বঞ্চিত করে ওই যোজনার সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে আরও ৮,০০০ জনকে।
মধ্যপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বাংলার সঙ্গে যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার শত্রুতামূলক আচরণ করছে, তা আবার প্রমাণিত হল। এর আগে উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ আমরা দিয়েছি। এ বারও আমাদের প্রশ্ন, সিএজি রিপোর্ট দেখে মধ্যপ্রদেশকেও কি অর্থ দেওয়া বন্ধ করবে নরেন্দ্র মোদীর সরকার?’’
গত বছর থেকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দফায় দফায় পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়েছে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বন্ধ রাখা হয়েছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থসাহায্য। এই আবহে সিএজি রিপোর্টকে হাতিয়ার করে মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ওই রিপোর্টটি পেশ করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় সে রাজ্যে মোট ২৪ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে ২৬ লক্ষ ২৮ হাজারেরও বেশি পাকা বাড়ি। যা লক্ষ্যমাত্রায় ৮২ শতাংশেরও বেশি। তবে ৬৪টি ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি দু’বার এবং ৯৮টি ক্ষেত্রে একই পরিবারের দুই পৃথক ব্যক্তি নিয়ম ভেঙে ওই প্রকল্পে অর্থসাহায্য পেয়েছেন বলে সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় দেড় বছর মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। বাকি সময়ে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মোদী সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)’ প্রকল্পের অন্তর্গত ‘পাবলিক হাউসিং প্রোগ্রাম’ শুরু করেছিল। লক্ষ্য ছিল, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের গ্রামাঞ্চলে ‘হাউস ফর অল’-এর (সকলের জন্য বাড়ি) স্লোগান বাস্তবায়িত করা। কিন্তু গোড়া থেকেই বিভিন্ন রাজ্যে সুবিধাপ্রাপকদের তালিকা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী দুই-তিন-চার চাকার গাড়ি বা নৌকার মালিকেরা ওই প্রকল্পের প্রাথমিক সুবিধাভোগী হতে পারেন না। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে সেই নিয়ম মানা হয়নি বলে সিএসজি রিপোর্টে বলা হয়েছে।