প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
দেশের তরুণদের মধ্যে ‘স্বয়ং সেবক’-এর মনোভাব তৈরি করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আরএসএস বা বিজেপির তরফ থেকে নয়। একেবারে সরকারি উদ্যোগেই। সেই লক্ষ্যে মোদী সরকার এবার ‘মেরা যুবা ভারত’ ওরফে ‘মাই ভারত’ নামের একটি স্বশাসিত সংস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সংস্থার মাধ্যমে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সি তরুণ, যাঁদের সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি, যাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশই প্রথমবারের ভোটার—তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করতে চাইছে মোদী সরকার। রাজনীতির অঙ্গনে অনেকেই মনে করছেন, মহিলা ভোটব্যাঙ্কের জন্য মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়ে এবার তরুণ প্রজন্মকে ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে পাখির চোখ করছে মোদী সরকার। কেন্দ্রের বক্তব্য, এই সংস্থার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুক তরুণদের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে যোগ দেওয়ার সুযোগ খুলে দেওয়া হচ্ছে। তার জন্য গ্রামে বা প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী তরুণদের দিল্লিতে বা রাজধানী শহরে আসতে হবে না। ‘মাই ভারত’ পোর্টালের মাধ্যমেই তাঁরা নাম লেখাতে পারবেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কোথায়, কী ধরণের কাজ করতে চান, তা বেছে নিতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩১ অক্টোবর এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন। পরিকল্পিত ভাবেই সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মবার্ষিকী তথা ‘জাতীয় একতা দিবস’-কে এ জন্য বেছে
নেওয়া হয়েছে।
কিছুদিন আগেই সংসদের বিশেষ অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী পাঁচ রাজ্যের আসন্ন ভোটে তা নিয়ে প্রচার করছেন। যদিও মহিলা সংরক্ষণ এখনই কার্যকর হচ্ছে না। বিরোধী শিবির বলছে, ‘মেরা যুবা ভারত’-ও মহিলা সংরক্ষণ আইনের মতোই ফাঁপা বুলি। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুক তরুণদের কাজ করিয়ে নেওয়া হবে। তাঁদের জন্য চাকরি বা রোজগারের বন্দোবস্ত হবে না।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর আজ বলেছেন, শুধু সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার নয়, তরুণদের মধ্যে সাংবিধানিক কর্তব্যবোধ জাগিয়ে তোলা দরকার। ভারতীয় দর্শন, ইতিহাসের বোধ, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ তৈরি করা দরকার। ‘স্বয়ং সেবক’-এর মনোভাব বাড়ানো দরকার। সেই লক্ষ্যে ‘মেরা যুবা ভারত’
একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে। অনেকেই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে চান। কিন্তু কোথায় কী ভাবে সুযোগ মিলবে, জানা থাকে না। অথচ নানা সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মসূচি চলতেই থাকবে। মন্ত্রীর দাবি, এতে কোনও চাকরি বা রোজগারের সুযোগ না থাকলেও এর মাধ্যমে তরুণদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শেখা, প্রকল্পে কাজ করা, নেতৃত্বদানের ক্ষমতা তৈরির সুযোগ বাড়বে।