CAA

পরোয়া নেই হাজার প্রতিবাদেও, সিএএ ফেরাব না, সাফ কথা শাহের

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থনে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতে জনসভা করেন বিজেপির সদ্যপ্রাক্তন সভাপতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২৫
Share:

সিএএ-র সমর্থনে লখনউয়ে এক সমাবেশে অমিত শাহ। মঙ্গলবার। পিটিআই

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘ক্যা-ক্যা-ছি-ছি’। অমিত শাহ পাল্টা বললেন, ‘ক্যাউ-ক্যাউ-ক্যাউ-ক্যাউ’।

Advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থনে আজ উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতে জনসভা করেন বিজেপির সদ্যপ্রাক্তন সভাপতি। বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির অন্যতম আঁতুড়ঘর উত্তরপ্রদেশ। তার রাজধানীতেই এখন চলছে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ। সেখানে শাহ বললেন: ‘‘তিন মাস পর অযোধ্যায় গগনচুম্বী মন্দির হলে আমাদের জীবন ধন্য হবে। আমার সঙ্গে বলুন, জয় শ্রীরাম। জয় জয় শ্রীরাম।’’ জনতা বলল, ‘জয় শ্রীরাম’। হল শঙ্খধ্বনিও।

কিন্তু শাহ এখানেই থামলেন না। নাগরিকত্ব আইনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষ কারা, স্পষ্ট করে দিলেন। বারবার নাম করে আক্রমণ করলেন ‘মমতাদিদি’, ‘রাহুলবাবা অ্যান্ড কোম্পানি’, অখিলেশ-মায়াবতী, বামেদের। বললেন, ‘‘বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা নরেন্দ্র মোদী আইন আনলেন, আর এঁরা সকলে ক্যাউ-ক্যাউ-ক্যাউ-ক্যাউ করতে শুরু করলেন। মমতাদিদি এত জোরে জোরে বলছেন, যেন কী না কী হয়ে গেল! আমি প্রশ্ন করতে চাই, মতুয়া, নমশূদ্র পরিবার, দলিত বাঙালিরা এ দেশে এসেছেন। তাঁরা নাগরিকত্ব পাচ্ছেন। আপনার কী সমস্যা ভাই বলুন আমাকে? আপনিই তো ২০০৩ সালে সংসদে দাবি করেছেন, এঁদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। আপনি করলে ঠিক, মোদী করলে বিরোধিতা!’’ এর পরেই চ্যালেঞ্জ ছোড়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ‘‘যাঁর যত বিরোধিতা করার করুন, সিএএ প্রত্যাহার হবে না।’’

Advertisement

শাহের আক্রমণ প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি জানি না তিনি কী বলেছেন। তবে এ নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা হলে জানাব।’’ তৃণমূলের আর এক শীর্ষনেতা বলেন, ‘‘কোথাও কোনও আলোচনা না-করে সিএএ পাশ করিয়ে সারা দেশে আগুন জ্বেলেছে বিজেপি। এখন এই সব গা-গরম করা কথা না-বলে দেশের স্বার্থে বিল পেশের আগে আলোচনা করা দরকার ছিল।’’

যোগী আদিত্যনাথেরা এ দিন মোদীর সঙ্গে শাহের জয়ধ্বনি দিয়ে তাঁকে ‘লৌহপুরুষ’, ‘আধুনিক ভারতের চাণক্য’ বলেছেন। আর শাহ মমতা থেকে রাহুল গাঁধীকে বসিয়েছেন ইমরান খানের সঙ্গে এক সারিতে। তিনি বলেন, ‘‘ইউপিএ সরকারের আমলে পাকিস্তান থেকে আলিয়া মালিয়া জামালিয়া এসে জঙ্গি হামলা করত। মৌনীবাবা (মনমোহন সিংহ) কিছু বলতেন না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সার্জিকাল স্ট্রাইক করলেই বিরোধিতা করেন রাহুলবাবা, মমতাদিদি। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ, পাকিস্তানে বিমান হানা, সিএএ নিয়ে ইমরান খান যে ভাষায় বলছেন, রাহুলবাবা-মমতার ভাষা এক। এঁদের কী সম্পর্ক ইমরান খানের সঙ্গে? হিম্মত থাকলে প্রকাশ্যে বিতর্ক করুন। মুসলিম তো দূরঅস্ত, এই আইন কারও নাগরিকত্ব কাড়ছে না।’’

শাহের মতে, লড়াইটা যাঁরা ভারতের ভাল চান বনাম যাঁরা দেশকে টুকরো টুকরো করতে চান। জেএনইউ-এর টুকড়ে-টুকড়ে গ্যাংকে জেলে পাঠানোর প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। বলেন, কংগ্রেসই দেশ ভাগ করেছে ধর্মের ভিত্তিতে। এখন চোখে ভোটব্যাঙ্কের চশমা পরে দেশভাগের ষড়যন্ত্র করছে, হিংসা ছড়াচ্ছে।

কংগ্রেস মনে করছে, সিএএ নিয়ে আগামিকাল সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আগে বিজেপি ভুয়ো-সমর্থন দেখাতে চাইছে। কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল মোদী-শাহের ৯টি ‘মিথ্যা’ তুলে ধরে বলেন, ‘‘আমি মোদী-শাহের সঙ্গে বিতর্কে রাজি।’’

অন্য দিকে, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব আজ শাহকে বিঁধে বলেন, ‘‘রাজ্যে এক বাবাই যথেষ্ট ছিল। আর এক জন এসে প্রবচন দিয়ে গেলেন। এই ঠগ বাবারা জনতার বিশ্বাসের সঙ্গে খেলছেন, তাই এঁদের ঝুলিতে কিছু দেবেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement