আন্দোলনে গিয়ে নিহত এক সিএএ-প্রতিবাদীর মেরঠের বাড়িতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ছবি: পিটিআই।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আক্রান্ত ও মৃতদের পরিবারের সঙ্গে ফের দেখা করলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢ়রা। এ বার মেরঠ ও মুজফ্ফরনগরে। শনিবার ওই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়ে ‘পুলিশি তাণ্ডব’-এর অভিযোগ শুনলেন তিনি। পরে কংগ্রেস নেত্রী বলেছেন, ‘‘পুলিশের মানুষকে রক্ষা করার কথা। অথচ এখানে ঠিক উল্টো হয়েছে।’’ এর আগেও পুলিশের বাধা এড়িয়ে লখনউতে ধৃত অভিনেত্রী-সমাজকর্মী সদাফ জাফর ও প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রিয়ঙ্কা। আজ জাফর, দারাপুরী-সহ ১৩ জন জামিন পেয়েছেন। বিজনৌরে নিহতদের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি।
এ দিন দিল্লি থেকে ফেরার পথে হঠাৎই মুজফ্ফরনগরে যান প্রিয়ঙ্কা। সঙ্গে ছিলেন সহারনপুরের এক কংগ্রেস নেতা। সেখানে তিনি দেখা করেন মৌলানা আসাদ রাজা হুসেনির সঙ্গে। অভিযোগ, সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ থামানোর নামে মাদ্রাসায় ঢুকে হুসেনিকে প্রবল মারধর করেছিল পুলিশ। সেখান থেকে বহু পড়ুয়াকে তুলে নিয়ে যায় তারা। বেশ কয়েক জন নাবালককে জেলবন্দিও করা হয়। তা ছাড়াও, এই প্রতিবাদে অংশ নিতে গিয়ে নিহত নুর মহম্মদের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন প্রিয়ঙ্কা। পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ওঁর স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দেড় বছরের একটি মেয়েও রয়েছে।’’ কংগ্রেস নেত্রীর কথায়, ‘‘যখনই যে মানুষের উপর অবিচার হয়েছে আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি। তাঁদের সাধ্যমতো সাহায্য করেছি।’’ এ দিন রুকাইয়া পরভীনের সঙ্গেও দেখা করেন প্রিয়ঙ্কা। পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল।
প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনে ‘পুলিশি অত্যাচারের’ বিশদ বিবরণ দিয়ে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেলের কাছে গত সপ্তাহে হলফনামা জমা দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশ বিনা কারণে রাজ্যের মানুষের উপরে কী ভাবে নির্যাতন চালিয়েছে তা সম্পূর্ণ জানিয়েছি। কোনও অন্যায় হলে পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এখানে পুলিশই তাণ্ডব চালিয়েছে। বিক্ষোভের দু’দিনের মাথায় বিয়ে হওয়ার কথা একটি মেয়ের। তাঁর কপালে এখন ১৬টা সেলাই।’’
মেরঠে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে দেখা করার জন্য একজোট হয়েছিলেন আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যেরা। সেখানে আজ তাঁদের অভিযোগ শোনেন নেত্রী। ২৪ ডিসেম্বর ১৪৪ ধারা জারি থাকায় প্রিয়ঙ্কা ও রাহুল গাঁধীকে মেরঠে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। ফলে ওই পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা না করেই দিল্লি ফিরে যেতে হয় তাঁদের। সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে মেরঠে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫ জন।