সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফের উত্তাল দিল্লি। শুক্রবার। ছবি: এপি।
সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠল দিল্লি। প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। জামা মসজিদের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী। কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজ্য জুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে টহল দিচ্ছে পুলিশ।
জামা মসজিদের সামনে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন কংগ্রেস নেতা অলকা লাম্বা এবং দিল্লির এক প্রাক্তন বিধায়ক শোয়েব ইকবাল। নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে লাম্বা বলেন, “দেশে এই মুহূর্তে বেকারি একটা বড় সমস্যা। কিন্তু আপনি এনআরসি-র জন্য মানুষকে লাইনে দাঁড় করাচ্ছেন। যেমনটা করেছিলেন নোটবন্দির সময়।” রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় আগের অশান্তির কথা মাথায় রেখেই শুক্রবার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে জামা মসজিদের সামনে।
জামা মসজিদের সামনে বিক্ষোভ। ছবি: এপি।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি সংগঠন এ দিন মিছিলের ডাক দিয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ভবন, সিলামপুর এবং জাফরাবাদ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই এ দিন শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছেন। উত্তরপ্রদেশ ভবনের সামনে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ ভবন। ১৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। ড্রোনের সাহায্যেও নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা এগনোর চেষ্টা করলে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্য দিকে, ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের মুক্তির দাবিতে কয়েকশো বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকায় বিক্ষোভকারীরা এগোতে পারেননি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। জোরবাগেও আজাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। জমায়েতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত শুক্রবারই এই জামা মসজিদের সামনেই চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছিল। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ চলে। দু’পক্ষেরই অনেকে আহত হন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে। জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, যন্তর মন্তর, সিলামপুর-সহ দিল্লির বহু জায়গায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। যানবাহনে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। সেই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এ দিন রাজ্য জুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ফের অশান্তির আশঙ্কা আঁচ করেই আগে থেকেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন।