বিজনৌরে নিহত যুবকের বাড়িতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ছবি: পিটিআই
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-বিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। কিন্তু পুলিশের দাবি ছিল, তাদের গুলিতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের সেই দাবি উড়িয়ে এ বার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরে ২০ ডিসেম্বর গুলিতে নিহত দ্বিতীয় যুবকের পরিবার। মোট ছ’জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নিহত সুলেমানের পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের সামনে গুলি করলেও পুলিশের ভয়ে এখন কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না।
নয়া নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি উত্তাল হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ। টানা তিন-চার দিন ধরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে উত্তরপ্রদেশে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ২০ ডিসেম্বর উত্তাল হয়ে উঠেছিল বিজনৌর। ওই দিন নাহতৌর গ্রামে বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল আনাস এবং সুলেমান নামে দুই যুবকের। আনাসের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুলেমান।
পুলিশের গুলিতেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করলেও পুলিশ তা মানতে চায়নি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহ বলেন, গোটা রাজ্যে শুধুমাত্র বিজনৌরে আনাস নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে পুলিশের গুলিতে। সে ক্ষেত্রেও আত্মরক্ষায় গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। এক কনস্টেবলের পেটে গুলি লাগার পর তিনি বাধ্য হয়ে গুলি চালিয়েছিলেন। রাজ্যের কোথাও উপর মহল থেকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
অর্থাৎ পুলিশের দাবি মতো, পুলিশের গুলিতে সুলেমানের মৃত্যু হয়নি। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, সুলেমান আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই দিন নমাজ পড়ে ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে যান। পুলিশ তাঁকে একটি গলির মধ্যে তাড়া করে নিয়ে গিয়ে গুলি করে। সুলেমানের পরিজনদের আরও অভিযোগ, গুলি করার পরে পুলিশ দেহ হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টাও করেনি। খবর পেয়ে তাঁরা নিজেরাই হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সুলেমানকে বাঁচানো যেত বলেও তাঁদের দাবি।
রীতিমতো নাম করে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুলেমানের পরিবার। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওই দিন বিজনৌরের স্টেশন হাউস অফিসার রাজেশ সোলাঙ্কি এবং ওসি আশিস তোমরের নেতৃত্বে কয়েক জন কনস্টেবল সঙ্গে ছিলেন। ওই দু’জন ছাড়া আরও চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।