রাধামোহন দাস। ফাইল চিত্র।
সদ্য সমাপ্ত উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে প্রথম বার বিধানসভায় নির্বাচনে লড়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর জন্য গোরক্ষপুর (শহর)-এর জেতা আসন ছেড়ে দিয়েছিলেন রাধামোহন দাস আগরওয়াল। আসন ছাড়ার পুরস্কার পেলেন রাধামোহন। তাঁকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। অন্য দিকে কংগ্রেসের তরফে প্রকাশিত প্রথম প্রার্থী তালিকায় টিকিট পেয়েছেন ‘বিক্ষুব্ধ’ জি-২৩ গোষ্ঠীর দুই নেতা বিবেক তনখা ও মুকুল ওয়াসনিক। কিন্তু ওই তালিকায় নেই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মার নাম।
আগামী ১০ জুন দেশের ১৫টি রাজ্যে ৫৭টি আসনে রাজ্যসভা নির্বাচন হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ ওই ১৫টি রাজ্যের তালিকায় নেই। তার মধ্যে আজ মোট ন’টি রাজ্যের ১৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিজেপি। এর মধ্যে কর্নাটক ও মহারাষ্ট্র থেকে দল টিকিট দিয়েছে যথাক্রমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও পীযূষ গয়ালকে। সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির মেয়াদ ফুরোলেও রাজ্যসভার প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম নেই। ফলে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে কোনও সাংবিধানিক পদে সরানো হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এ যাত্রায় সবচেয়ে বেশি রাজ্যসভা আসনের ভোট হচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। ওই রাজ্যের এগারোটি আসনের মধ্যে সাতটি আসনে বিজেপি ও তিনটি আসনে সমাজবাদী পার্টির জয় নিশ্চিত। বাকি একটি আসন নিয়ে তুমুল লড়াইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। বিরোধী সপা শিবিরের অভিযোগ, নিজেদের অষ্টম প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন পেতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজেপি নেতারা। আজ উত্তরপ্রদেশে যে ছ’টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে যোগীকে আসন ছেড়ে দেওয়ার পুরস্কার পেয়েছেন বণিক সম্প্রদায়ের নেতা রাধামোহন আগরওয়াল। গোরক্ষপুর জেলায় নিজের আসন ছেড়েছিলেন প্রথম যোগী সরকারের মন্ত্রী সঙ্গীতা যাদবও। তাঁকেও এ যাত্রায় গোরক্ষপুর থেকে দ্বিতীয় প্রার্থী করে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। ব্রাহ্মণ প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন লক্ষ্মীকান্ত বাজপেয়ী। পিছিয়ে পড়া গুজ্জর ও নিষাদ শ্রেণির প্রতিনিধিত্বের কথা মাথায় রেখে যথাক্রমে প্রার্থী করা হয়েছে সুরেন্দ্র নাগর ও বাবুরাম নিষাদকে। মহিলা ক্ষমতায়ন ও জাঠ সমাজকে বার্তা দিতে বারাণসীর দর্শনা সিংহকে টিকিট দিয়েছে দল। তিনি বিজেপির মহিলা শাখার সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদের দায়িত্বে রয়েছেন। সূত্রের মতে, ওই রাজ্যে আরও দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে দলের।
উত্তরপ্রদেশের পরে সবচেয়ে বেশি আসনে ভোট হবে মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুতে। দু’রাজ্যেই ৬টি আসনে ভোট হওয়ার কথা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে পীযূষ ছাড়া আরও দু’জনের নাম ঘোষণা করেছে দল। তামিলনাড়ুর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেননি বিজেপি নেতৃত্ব। বিহারের পাঁচটি আসনের মধ্যে দু’টিতে ও কর্নাটকে চারটি আসনের মধ্যে দু’টিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দল। এক জন করে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে।
অন্য দিকে আজ ১০ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। তাতে তামিলনাড়ু থেকে প্রার্থী হিসেবে পি চিদম্বরম, কর্নাটক থেকে জয়রাম রমেশের নাম রয়েছে। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে বিবেক তনখাকে মধ্যপ্রদেশ ও মুকুল ওয়াসনিককে রাজস্থান থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। রাজস্থান থেকে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও। মহারাষ্ট্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে তরুণ কবি ইমরান প্রতাপগড়ীকে। সূত্রের খবর, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সুপারিশে প্রার্থী হয়েছেন ইমরান। ঝাড়খণ্ডের দু’টি আসনের মধ্যে একটি আসন চেয়ে শাসক দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-এর কাছে দরবার করেছিল কংগ্রেস। প্রথমে তা খারিজ করে দেওয়া হলেও গত কাল রাতে জেএমএম নেতা তথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন দিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই আজ সকালে সোরেন জানান, রাজ্যের একটি আসনে জেএমএম ও কংগ্রেসের যুগ্ম প্রার্থী দেওয়া হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।