প্রতীকী ছবি।
জমি নিয়ে বিবাদের জেরে বন্ধুকে খুন করানোর জন্য ভাড়াটে খুনিদের কাজে লাগিয়েছিলেন এক ইমারতি ব্যবসায়ী। কিন্তু তিনিও খুন হলেন সেই ভাড়াটে খুনিদের হাতেই। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহতেরা হলেন আমির খানজ়াদা এবং সুমিত জৈন। দু’জনেই ইমারতি ব্যবসায়ী। জমির কারবারও করতেন। একটি জমি নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। গত ২১ অগস্ট ব্যবসা সংক্রান্ত একটি বৈঠকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন আমির। কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি। পর দিন তাঁর পরিবার পুলিশে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে।
তদন্তে নেমে পুলিশ ২৮ অগস্ট খোপোলির কাছে একটি পরিত্যক্ত গাড়ির খোঁজ পায়। সেখানে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেন, গাড়িতে রক্তের দাগ। গুলির চিহ্ন। গাড়ির ভিতর থেকে এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে আমির বলেই শনাক্ত করে তাঁর পরিবার। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালাতে গিয়েই পুলিশ জানতে পারে এই খুনের নেপথ্যে রয়েছেন আমিরেরই এক বন্ধু সুমিত। তাঁর খোঁজ চালাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু গত বুধবার ওই খোপোলিতেই কারনালা পাখিরালয়ের কাছেই আরও একটি দেহ উদ্ধার করে। ঘটনাচক্রে, উদ্দার হওয়া দেহটি ছিল সুমিতের।
আমিরের দেহ উদ্ধার এবং তার পর পরই তাঁর বন্ধু সুমিতের দেহ উদ্ধার নিয়ে রহস্য বাড়ছিল। আর সেই রহস্যভেদ করতে দু’টি খুনের যোগসূত্র খুঁজে পায় পুলিশ। বিঠল বাবান নাকারে নামে এক দুষ্কৃতীকে সন্দেহের বশে প্রথমে আটক করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আরও চার দুষ্কৃতীর নাম প্রকাশ্যে আসে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। নাকাড়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জয়সিংহ, আনন্দ, বীরেন্দ্র এবং অঙ্কুশ নামে চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাচক্রে, তারা সকলেই ভাড়াটে খুনি বলে জানতে পারে পুলিশ। তাদের গ্রেফতার করে জেরার সময় আমিরকে খুনের কথা প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ জানতে পারে, রায়গড়ে সাড়ে তিন একরের একটি জমি নকল নথি ব্যবহার করে দু’কোটি টাকায় কিনেছিলেন সুমিত। সেটি জানতে পারেন আমির। তার পর থেকেই সুমিতের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন তিনি। তাঁকে ওই জমির ভাগ দেওয়ার দাবি তোলেন। তাই তাঁকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন সুমিত। ৫০ লক্ষ টাকার চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি কাজে লাগিয়ে আমিরকে সুমিত খুন করান বলে অভিযোগ। সেই কাজ হয়ে যাওয়ার পর ভাড়াটে খুনিরা ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। কিন্তু সুমিত দিতে রাজি হননি। তখন তাঁকেও খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।