পউরির বাড়িতে যোগী আদিত্যনাথের অশীতিপর বাবা আনন্দ সিংহ বিস্ত। ছবি: পিটিআই।
মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দিলেন বাবা। অনেকের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে, সবাইকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে উত্তরপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে। মন্তব্য অশীতিপর আনন্দ সিংহ বিস্ত-এর। অবসরপ্রাপ্ত ফরেস্ট রেঞ্জারের কথায়: ‘‘বোরখা পরিহিত মহিলারাও তাঁকে ভোট দিয়েছেন। তাঁর উচিত সব ধর্মকে সম্মান করা, সবার মন জয় করা।’’
পরিবার ছেড়ে অনেক বছর আগেই সন্ন্যাস নিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। সন্ন্যাস নেওয়ার আগে তাঁর নাম ছিল অজয় সিংহ বিস্ত। অজয় থেকে আদিত্যনাথ হয়ে ওঠার পর পূর্বাশ্রমের সঙ্গে যোগাযোগ আর পুরোদস্তুর নেই ঠিকই। কিন্তু ৮৪ বছরের বৃদ্ধ আনন্দ সিংহ বিস্ত আর তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী দেবীর কাছে আদিত্যনাথ এখনও সেই অজয়ই। ছেলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় খুশির সীমা নেই আনন্দ-সাবিত্রীর পরিবারে। শুধু পরিবারে নয়, আদিত্যনাথের গোটা গ্রামই আত্মহারা, আপ্লুত। কিন্তু এত হইচইয়ের মাঝেও দায়বদ্ধতার কথা ভুলছেন না বৃদ্ধ আনন্দ। বিপুল জনাদেশ নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে উত্তরপ্রদেশে। যোগী আদিত্যনাথের উপর রাজ্যের দায়ভার সঁপে দিয়েছে দল। ফলে যে প্রত্যাশা নিয়ে রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, সেই অসীম প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব যে এখন যোগী আদিত্যনাথেরই, সে কথা ছেলেকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন আনন্দ সিংহ বিস্ত।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ছেলের প্রথম কয়েক দিনের গতিবিধি দেখে খুশি আনন্দ সিংহ বিস্ত। —ফাইল চিত্র।
‘‘মুসলিম মহিলারাও বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। তিন তালাক থেকে মুক্তি পেতে বিজেপি তাঁদের সাহায্য করবে, এই আশা নিয়েই তাঁরা ভোট দিয়েছেন। সব ধর্মের মানুষ মনে করছেন, বিজেপি এবং আদিত্যনাথ তাঁদের উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারেন। সে কথা মাথায় রাখতে হবে।’’ আনন্দ সিংহ বিস্ত সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই বার্তা দিয়েছেন ছেলের প্রতি।
আরও পড়ুন: ইভ টিজিং রুখতে অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড নামাল যোগী সরকার
স্ত্রী সাবিত্রীকে নিয়ে পাউরি জেলার পানচুর গ্রামে থাকেন আনন্দ সিংহ বিস্ত। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম কয়েক দিনে ছেলে আদিত্যনাথের কাজের গতিপ্রকৃতি যেমন, তাতে বাবা আনন্দ সিংহ খুশিই। ‘‘প্রথম দিনেই মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মীদের বলেছেন, এমন শব্দ ব্যবহার করবেন না যাতে মানুষ আঘাত পান। তিনি যে সত্যিই ভাল কাজের চেষ্টা করছেন, তা দেখা যাচ্ছে।’’ তবে ছেলের প্রতি বাবার পরামর্শ, ‘হিন্দুত্বের প্রচারক’ হিসেবে যে পরিচিত রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের, সেই পরিচিতি তাঁকে মুছতে হবে। আদিত্যনাথকে সবার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উঠতে হবে। আনন্দ সিংহ অন্তত এমনই চান।