মৃত তরুণী শিল্পা পাণ্ডে। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির গাজ়িপুরের পরিত্যক্ত এক পোড়া স্যুটকেসের নেপথ্যে রয়েছে হাড়হিম করা ঘটনা। রবিবার স্থানীয় থানার কাছে ওই স্যুটকেস নিয়ে খবর যায়। পুলিশ এসে তা খুলে দেখে, তার মধ্যে মহিলার দগ্ধ দেহ। পুলিশ খুন এবং খুনের প্রমাণ নষ্টের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। সেই তদন্তেই উঠে এল ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা।
পূর্ব দিল্লির ডিসিপি অভিষেক ধানিয়া বলেন, ‘‘তদন্তের শুরুতে আমাদের কাছে কোনও তথ্য ছিল না। যে এলাকা থেকে স্যুটকেস উদ্ধার হয়, প্রথমেই আমরা সেই এলাকায় যত সিসি ক্যামেরা ছিল তা পরীক্ষা করি। সেই ফুটেজ ধরেই অভিযুক্তের খোঁজ মিলেছে।’’ কী ভাবে তদন্তপ্রক্রিয়া এগিয়েছে তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন অভিষেক। তিনি জানান, ফুটেজ দেখে একটি সন্দেহজনক গাড়িকে শনাক্ত করা হয়। সেই গাড়ির নম্বর প্লেট দেখে মালিকের খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে পারেন, লোনির এক বাসিন্দার নামে গাড়িটি নথিভুক্ত করা রয়েছে। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে মাসখানেক আগে অমিত তিওয়ারি নামে এক যুবককে বিক্রি করে দিয়েছেন।
খোঁজ শুরু হয় অমিতের। সিসি ক্যামেরা দেখে অমিতের খবর পান তদন্তকারীরা। পরে তাঁকে হেফাজতে নেন তাঁরা। জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, কাকার মেয়ে শিল্পার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অমিত। তিনি পেশায় ক্যাবচালক। এক বছর ধরে শিল্পার সঙ্গে একত্রবাসে (লিভ ইন) থাকছিলেন তিনি। সম্প্রতি সম্পর্কে চিড় ধরে। অমিত চাইছিলেন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে, কিন্তু শিল্পা বিয়ে করার জন্য জোর দিতে থাকেন। শনিবার এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। মত্ত অবস্থায় ছিলেন অমিত। রাগের মাথায় শিল্পাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি!
দেহ লোপাটের জন্য অনুজ বলে তাঁর এক বন্ধুকে ডেকে পাঠান অমিত। তার পর দু’জনে মিলে দেহ স্যুটকেসে ভরে গাড়িতে চাপিয়ে ফেলে আসার পরিকল্পনা করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল পরিকল্পনা ছিল অমিতেরই। প্রথমে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কোনও জায়গায় শিল্পার দেহ ভরা স্যুটকেস ফেলে রাখার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু যাত্রাপথে দুই চেকপোস্ট পার হওয়ার পরই তাঁরা কেউই আর ঝুঁকি নিতে চাননি। কাছাকাছি পরিত্যক্ত অন্ধকার জায়গায় স্যুটকেসটি ফেলে দেন। তার আগে পেট্রল পাম্প থেকে এক বোতল ডিজেল কেনেন। স্যুটকেস-সমেত শিল্পার দেহ জ্বালিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান অমিত এবং অনুজ। পুলিশ দু’জনকেই গ্রেফতার করে।