ছবি : টুইটার থেকে।
প্রতিবেশী এক মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি কর্মী। তাঁর চরিত্র নিয়ে কু-মন্তব্য করার পাশাপাশি তাঁকে শারীরিক নিগ্রহও করেছিলেন তিনি। ‘অপরাধের’ শাস্তি দিতে ওই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ নিল স্থানীয় প্রশাসন।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারের ‘বুলডোজার বিচার’ নতুন ঘটনা নয়। যোগী সরকারের দ্বিতীয় বারের সরকার গঠনের আগে থেকেই জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। সোমবার সেই বুলডোজারের মুখোমুখি হল এক বিজেপি কর্মীর সম্পত্তিও। নয়ডার ওই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে আবাসনের ভিতরে বেআইনি দখল এবং নির্মাণের অভিযোগ এনেছিলেন আবাসিকরা। শুক্রবার তা নিয়ে আবাসিকদের সঙ্গে বচসা চলাকালীন এক মহিলাকে হেনস্থা করেন তিনি। নারী-হেনস্থার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয় বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। পরে নয়ডার পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনেও অভিযোগ দায়ের করে। এই আইনে অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙতে পারে প্রশাসন।
ওই বিজেপি কর্মীর নাম শ্রীকান্ত ত্যাগী। তিনি নয়ডার গ্র্যান্ড ওমাক্সে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা। মহিলাকে হেনস্থা করার পর তাঁর বাড়িতে বুলডোজার চালানোর পর প্রশ্ন উঠেছে তবে, হাথরস, উন্নাও কিংবা গোরক্ষপুরে একের পর এক ধর্ষণ এবং নারী-বিরোধী অপরাধের ঘটনায় দোষীরা ছাড় পেল কেন? বিরোধীদের প্রশ্ন, উন্নাওয়ে খোদ বিজেপির বিধায়কেরই নাম ছিল মূল অভিযুক্ত হিসেবে। হাথরসের ঘটনায় ধর্ষিতার পরিবারকে চোখ রাঙানোর অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধেই। নয়ডার ঘটনায় অবশ্য প্রশাসন কোনও ব্যখ্যায় যায়নি।
বস্তুত, দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই অপরাধীদের শাস্তি দিতে বুলডোজার ব্যবহার করা শুরু করেছে যোগী সরকার। প্রথমে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজে ব্যবহার করা হলেও পরে অপরাধীদের ‘শাস্তি’ দিতেও ব্যবহার শুরু হয় বুলডোজারের। গত মার্চে যোগী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সমর্থকদের পাশাপাশি বিরোধী শিবিরেও তাঁর নাম হয়ে যায়, ‘বুলডোজারওয়ালা’। যে খানে সমর্থকরা যোগীর বুলডোজারকে ‘দুষ্টের দমন’ হিসেবে প্রচার করতে শুরু করেন, সেখানে বিরোধীদের পাল্টা দাবি ছিল অশিষ্টদের পাশাপাশি সরকার তার অপছন্দের তালিকা খাটো করতেও ব্যবহার করা হচ্ছে বুলডোজার।