নজর বাজেটের দিকে
Nirmala Sitharaman

Budget 2022: কর-বোঝা কমবে কি, আশা ফের

আয়করের বোঝা কমবে কি না, এমনিতে প্রতিবারই কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় বিশেষত মধ্যবিত্ত, চাকুরিজীবীদের মনে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫১
Share:

ফাইল চিত্র।

বছরে আয় আড়াই লক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে, ৫ শতাংশ আয়কর। রোজগার পাঁচ লক্ষ পেরোলেই এক লাফে তা ২০ শতাংশ। আর বার্ষিক ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ঘাড়ে ৩০ শতাংশ আয়করের বোঝা। নানা রকম সারচার্জ-সহ আদপে যা ৪০ শতাংশের আশেপাশে। আয়করের এই বোঝা থেকে কিছুটা হলেও সুরাহা মিলবে কি না, তার উত্তর পেতে বাজেটের দিকে সাগ্রহে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ। ফি বছরের মতো এ নিয়ে গুঞ্জন ক্ষমতার অলিন্দ এবং রাজনৈতিক মহলেও।

Advertisement

আয়করের বোঝা কমবে কি না, এমনিতে প্রতিবারই কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় বিশেষত মধ্যবিত্ত, চাকুরিজীবীদের মনে। তার উপরে গত দু’বছরে কোভিডের ধাক্কায় বহু মানুষ রুটিরুজি খুইয়েছেন। অনেকের চাকরি গিয়েছে, আবার চাকরি না গেলেও আয় কমেছে অনেকের। এই পরিস্থিতিতে ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে সাধারণ মধ্যবিত্তদের আশা, আয়করের বোঝা অন্তত কিছুটা কমবে। ফলে আয়কর কেটে নেওয়ার পরে হাতে থাকা নিট টাকার অঙ্ক বাড়বে খানিকটা।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাজেটের প্রস্তুতি পর্বে ৩০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে বেশ কয়েকটি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ৫%-এর পরেই একেবারে ২০%, তার পরে সরাসরি ৩০% হারের আয়কর-কাঠামো যথেষ্ট চড়া। তার উপরে নানা রকম সারচার্জ বসার ফলে বেশি আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে আয়করের বোঝা ৪০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। এই বোঝা কিছুটা কম হওয়া দরকার।

Advertisement

এতে মানুষের খানিকটা সুরাহা হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতির দিক থেকেও যুক্তি হল, আয়কর মেটানোর পরে মানুষের হাতে খরচ করার মতো নগদ টাকা বাড়লে, বাজারে কেনাকাটা বাড়বে। দেশের অর্থনীতিতে তার সুফল দেখা যেতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যগুলির তরফ থেকে এই দাবি ওঠার পরে অর্থ মন্ত্রকে তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে।

আর্থিক জগতের পেশাদারেরাও মনে করছেন, এ বার বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হতে পারে। যেমন, উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি-র সমীক্ষা অনুযায়ী, অনেকেরই ধারণা, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ২.৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়ানো হতে পারে। অর্থাৎ, এখন বছরে আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও কর গুনতে হয় না। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ বার বাজেটে সেই সীমা বৃদ্ধির সম্ভাবনা। অনেকের মতে, ৮০সি ধারাতেও করছাড়ের অঙ্ক বাড়তে পারে। বর্তমানে পিএফ, জীবনবিমার মতো বিভিন্ন প্রকল্পে বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ের উপরে করছাড়ের সুবিধা মেলে। দীর্ঘদিনের দাবি, ওই সীমা বাড়ানো হোক। বেতনভুক কর্মীদের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের ছাড় ৫০,০০০ টাকা থেকে বাড়ানো হতে পারে বলেও অনেকের মত।

দু’বছর আগে ২০২০ সালের বাজেটে পুরনো আয়কর-কাঠামোর পাশাপাশি নতুন একটি কম হারের আয়কর কাঠামোও চালু করেছিলেন নির্মলা। সেখানে করের হার কম হলেও বিভিন্ন রকমের ছাড় তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই কাঠামোয় ৫ লক্ষ

টাকা থেকে ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০%, ৭.৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয়ে ১৫%, ১০ থেকে ১২.৫ লক্ষ টাকা আয়ে ২০%, ১২.৫ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আয়ে ২৫% এবং ১৫ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০% আয়ের ব্যবস্থা চালু হয়। আয়করের হার কম হলেও, খুব কম জনই নতুন কর-কাঠামোয় নাম লিখিয়েছেন। কারণ সেখানে প্রভিডেন্ট ফান্ড, বাড়ির ঋণ, সন্তানের স্কুল ফি, জীবনবিমা, স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রে যে সব ছাড় ও সুবিধা পুরনো ব্যবস্থায় আছে, তা মিলছে না।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এমনও হতে পারে যে, পুরনো করের কাঠামোয় কিছু রদবদল না করে করদাতারা যাতে নতুন কর কাঠামোয় গিয়ে এমনিতেই কম হারের সুবিধা নেন, তার জন্য কিছু উৎসাহবর্ধক পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে। তবে শেষ পর্যন্ত আয়করের বোঝা কমবে কি না, কিংবা কমলেও কোন পথে কমবে, তা বাজেটের ঘোষণাতেই জানা যাবে।

নির্মলার সঙ্গে বৈঠকে কয়েকটি রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর মত ছিল, মোদী সরকার যে ভাবে কর্পোরেট করের হার কমিয়েছে, আয়করের ক্ষেত্রেও একই দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া যেতে পারে। অতিমারির আগে ২০১৯-এ কর্পোরেট করের হার কমিয়েছিল মোদী সরকার। সরকারের যুক্তি ছিল, এতে কর ফাঁকির পরিমাণ কমবে। একই ভাবে, আয়করের বোঝা কমালেও, কর ফাঁকি কমবে। করদাতার সংখ্যা বাড়বে। রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীদের মতে, আয়করের বোঝা কমালেও আয়কর সংগ্রহে একই সুফল মিলতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement