ছবি পিটিআই।
ভারতে করোনার দৈনিক সংক্রমণ প্রায় দু’লক্ষ ছুঁয়ে ফেলল। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সংক্রমণ ১৫.৮ শতাংশ বেড়ে ১.৯৪ লক্ষ যেমন পেরিয়েছে, তেমনই অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা গত ২১১ দিনের রেকর্ড ভেঙেছে। এখন তা ৯.৫৫ লক্ষ! ওমিক্রনে আক্রান্ত মোট ৪৮৬৮ জন।
এই পরিস্থিতিতে ভারত বায়োটেক দাবি করেছে, তাদের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের বুস্টার ডোজ়টি করোনার ডেল্টা এবং ওমিক্রন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম। এক বিবৃতিতে এ দিন সংস্থাটি বলেছে, ‘‘পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ নমুনায় দেখা গিয়েছে, ডেল্টা ভেরিয়েন্ট প্রতিহত হয়েছে। ৯০ শতাংশে ওমিক্রন প্রতিহত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় যে, প্রতিনিয়ত রূপ পরিবর্তন করে চলা অতিমারির সঙ্গে লড়ার ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিনের মতো নিষ্ক্রিয় করোনাভাইরাস দিয়ে তৈরি টিকা একটি পথ খুলে দিতে পারে।’’
তবে এই দাবি সত্যি হলেও সবাই কিন্তু কোভ্যাক্সিনের বুস্টার ডোজ় পাবেন না। কোভিডের টিকাকরণ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি বলেই দিয়েছে, মিশ্র টিকার কোনও ভাবনা এখনও নেই। প্রথম দু’টি ডোজ় হিসেবে প্রত্যেকে যে টিকা নিয়েছেন, বুস্টার হিসাবে সেই টিকাই নিতে হবে। অর্থাৎ কোভিশিল্ড বা অন্য টিকা নেওয়া থাকলে বুস্টার হিসাবে এ দেশে কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পথ বন্ধ।
এখনও পর্যন্ত ভারতে ১৫৪ কোটিরও বেশি ডোজ়ের টিকা দেওয়া হয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধাদের টিকাকরণও এগোচ্ছে। গত কালই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে অক্সিজেন সংক্রান্ত পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে রাজ্য স্তরে অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম গড়ার পরামর্শ, যারা কোথায় কত অক্সিজেন মজুত রয়েছে, তা নজরে রাখবে। অক্সিজেনের ভান্ডার তৈরির পাশাপাশি অক্সিজেন প্লান্ট সক্রিয় রাখা, পেশাদার কর্মীদের কাজে লাগানো ও প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সমন্বয় করে এগোতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন আজ সকালে বলেছিলেন, রাজধানীতে কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হওয়ার সংখ্যাটি গত পাঁচ দিন ধরে একটি স্থিতিশীল জায়গায় এসে পৌঁছেছে। তা আর বাড়ছে না। এখনও ৮৫% শয্যা ফাঁকা রয়েছে। কাজেই ধরে নেওয়া যেতে পারে, অতিমারি এ যাত্রায় শীর্ষ ছুঁয়ে ফেলেছে। আগামী দু’তিন দিনে দিল্লিতে সংক্রমণ কমে গেলে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধও তুলে নেওয়া হবে। যদিও দিনের শেষে দেখা গিয়েছে, আজ দিল্লিতে ২৭ হাজারেরও বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু ৪০টি। সংক্রমণের জাতীয় হার যেখানে ১১.৫ %, সেখানে দিল্লিতে তা ২৬.২২%। মুম্বইয়ে আজ সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১৬,৪২০ জনের।
আজ পুদুচেরিতে জাতীয় যুব উৎসবের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘দেশের ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিরা এত কম সময়ের মধ্যে দু’কোটি টিকা নিয়ে ফেলেছে। এটাই যুব সমাজের দায়িত্ববোধের প্রমাণ।’’ ভিডিয়ো মাধ্যমে আজ ১১টি মেডিক্যাল কলেজ এবং চেন্নাইয়ে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ক্লাসিকাল তামিলের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘অভূতপূর্ব অতিমারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে। ভারত সরকার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বহু সংস্কার করেছে। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের দৌলতে এ দেশের দরিদ্রেরাও এখন সেরা মানের চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন।’’