পার্থ দাশগুপ্ত।
টিআরপি রেটিং কেলেঙ্কারিতে জড়িত ‘ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল’ (বিএআরসি)-এর প্রাক্তন সিইও পার্থ দাশগুপ্তকে জামিন দিল বম্বে হাইকোর্ট। মোটা টাকার বিনিময়ে বেসরকারি সংবাদসংস্থা রিপাবলিক টিভিকে রেটিং সংক্রান্ত ‘সুবিধা পাইয়ে দেওয়া’র অভিযোগ ছিল পার্থর বিরুদ্ধ। গত মাসে নিম্ন আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মঙ্গলবার ২ লক্ষ টাকার বন্ডের বিনিময়ে ৬ মাসের জন্য পার্থকে শর্ত স্বাপেক্ষে জামিন দেয় আদালত।
গত ২৪ ডিসেম্বর টিআরপি মামলায় গ্রেফতার করা হয় পার্থকে। তারপর থেকে মুম্বইয়ের তালোজা জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন। জানুয়ারিতে মুম্বইয়ের জে জে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। অক্সিজেন দিতে হয়। পার্থকে পুলিশ হেফাজতে রেখে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তাঁর কন্যা। আদালতে এই মর্মে পার্থর জামিনের আবেদন করেন তিনি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পার্থর জামিনের মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছিল বম্বে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার তিনি জামিন পেলেন।
পার্থর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রিপাবলিক টিভির এডিটর-ইন-চিফ অর্ণব গোস্বামীর থেকে ‘টাকা নিয়ে’ ওই টিভি চ্যানেলের টিআরপি রেটিং বদলে দিতে সাহায্য করেছিলেন। বিএআরসি-র সিইও পদের অপব্যবহারও করেছিলেন। বিনিময়ে অর্ণবের থেকে নিয়েছিলেন নগদ ৪০ লক্ষ টাকা এবং ১২ হাজার মার্কিন ডলার। একটি ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটেই বিষয়টি সামনে এসেছে বলে জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা।
এই অভিযোগের জবাবে পার্থর আইনজীবী আবাদ পোণ্ডা বলেন, গত ৩ বছরে পার্থ ১০ কোটি টাকার আয়কর জমা করেছেন। এতে প্রমাণ হয় যে এই অতি ন্যূনতম ওই অর্থের জন্য তাঁর টিআরপি বদলানোর মতো কাজ করে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কোনও প্রয়োজন নেই।
সরকারি আইনজীবী জানিয়েছিলেন, পার্থ দাশগুপ্তর পাশাপাশি, বিএআরসি-র অন্যান্য প্রাক্তন প্রধানের সঙ্গেও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে কথা হয়েছিল অর্ণবের। পার্থর আইনজীবী পোণ্ডা অবশ্য এই চ্যাটের বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন। তাঁর যুক্তি সবার সঙ্গে অর্ণবের কথা হলেও বাকিদের এড়িয়ে শুধু পার্থকেই দোষারোপ করা হচ্ছে। পোন্ডা বলেন, ‘‘টিআরপির রেটিং বদলানোর ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন প্রাক্তন বিএআরসি সিওও রোমিল রামঘরিয়া। অথচ ইতিমধ্যেই জামিন দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তা হলে পার্থকে কেন লক্ষ করা হবে?’’
অর্ণবের সঙ্গে পার্থর একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটেরও উল্লেখ করেন পোণ্ডা। ওই চ্যাটে অর্ণবকে পার্থ বলেছেন, ‘‘তোমার অনেক শত্রু আছে। আমি তোমার বন্ধু হতে রাজি আছি। কিন্তু তার জন্য আমি আমার মূল্যবোধ আর নীতি বিসর্জন দিতে পারব না।’’
প্রসঙ্গত, টিআরপি রেটিং কেলেঙ্কারিতে গত বছর অক্টোবরে পার্থর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।