বিস্ফোরণের পর প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাজি কারখানার আশপাশ। ছবি: এক্স।
রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে কয়েকটি দেহ। বাজি কারখানা কয়েক হাত দূরে জখম অবস্থায় কাতরাচ্ছেন কয়েক জন। বেশ কয়েকটি বাইক বিস্ফোরণের ধাক্কায় উড়ে গিয়ে পড়েছে রাস্তায়। মধ্যপ্রদেশের হরদা জেলার বৈরাগড়ে বাজি কারখানার আধ কিলোমিটার এলাকায় মঙ্গলবার সকালে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বিস্ফোরণের জেরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। পাশাপাশি, তাঁদের চিকিৎসার বিষয়ে যাতে সব রকম পদক্ষেপ করা হয় সে কথাও বলেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, মৃতদের মধ্যে কয়েক জনের হাত-পা উড়ে গিয়ে আধ কিলোমিটার দূরে পড়েছে। কয়েক জনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, কারখানা থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে মূল সড়ক। বিস্ফোরণের জেরে কয়েক জন পথচারীও জখম হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ৪০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত মাটি কেঁপে উঠেছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, আচমকাই জোরালো আওয়াজ শুনতে পান। তার পর বাড়িটি কেঁপে ওঠে। জানলার কাচগুলি ভেঙে যায়। কারখানা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাড়ি ওই ব্যক্তির। দুপুর ১১টা নাগাদ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন বোমা পড়েছে। বাড়ি কেঁপে ওঠায় অনেকে আবার ভেবেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। ফলে বৈরাগড়ে হুলস্থুল পড়ে যায়। কিন্তু পরে স্থানীয়রা জানতে পারেন, ওই এলাকায় যে বাজি কারখানা রয়েছে, সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে। দু’কিলোমিটার পর্যন্ত সেই আওয়াজ শোনা গিয়েছে। এমনকি বিস্ফোরণের ফলে আগুনের গোলা এবং ধোঁয়াও দেখা গিয়েছে অনেক দূর থেকে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। আগুনে ঝলসে গিয়েছেন শতাধিক। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, কারখানা থেকে কয়েক জন কর্মীর দেহ উড়ে এসে রাস্তায় পড়ে।
বিস্ফোরণের পর পরই কারখানার আশপাশের ৬০টি বাড়িতেও আগুন ধরে যায়। সেই বাড়িগুলি থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আরও একশোটি বাড়ি দ্রুত খালি করে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১০-১৫টি পর পর জোরালো বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের আওয়াজ কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গিয়েছে। এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। তিনি আহতদের দ্রুত চিকিৎসা করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ভোপাল এবং ইনদওরের মেডিক্যাল কলেজ এবং ভোপাল এমসকে আহতদের টিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছেন তিনি। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে মন্ত্রী উদয় প্রতাপ এবং প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কী ভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বাজি কারখানাটি অবৈধ ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।