হাসপাতাল থেকে সাইকেলে বৃদ্ধার মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
শববাহী যান ভাড়া করার মতো সামর্থ্য ছিল না। হাসপাতালে বৃদ্ধার মৃত্যুর পর নিরুপায় হয়ে তাই দেহ সাইকেলে তুলে নিলেন গ্রামবাসীরা। ওই বৃদ্ধার আত্মীয় পরিজন কেউ নেই। তাই গ্রামবাসীরাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। হাসপাতাল থেকে তাঁর দেহ বহন করার ছবিতে দারিদ্রের সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠল অমানবিকতাও।
ঘটনাটি ওড়িশার শোনপুর জেলার। সেখানে একটি সরকারি হাসপাতালে ওই বৃদ্ধা চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর শবদেহ বহন করার জন্য কোনও গাড়ি পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। মৃত বৃদ্ধার নাম রুক্মিণী সাহু। তিনি শোনপুরের মেঘলা গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধা একাই থাকতেন। তাঁর নিজের বলে কেউ ছিলেন না। সম্প্রতি প্রচণ্ড গরমে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গ্রামবাসীরা তাঁকে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। অভিযোগ, এর পর গ্রামবাসীদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়, দেহ নিয়ে যেতে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে শববাহী কোনও যান পাওয়া যায়নি। দেহ সরানোর জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। নিরুপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত সাইকেলেই বৃদ্ধার দেহ তুলে নেন এক গ্রামবাসী। সাইকেলে করেই দেহ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর বৃদ্ধার সৎকার করা হয়।
যাঁর সাইকেলে দেহটি তোলা হয়, তাঁর নাম শান্তনু গুরু। তিনি বলেন, ‘‘বৃদ্ধার দেখাশোনার জন্য কেউ ছিলেন না। আমরাই কয়েক জন মিলে ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম। ওঁর মৃত্যুর পর আমাদের হাসপাতাল থেকে বলা হয়, দেহটি দ্রুত সরিয়ে নিতে। নয়তো ওঁরা পুলিশ ডাকবেন বলে হুমকি দেন। আমাদের অন্য কোনও উপায় ছিল না। আমার সাইকেলে দেহটি তাই তুলে নিয়েছিলাম।’’
গ্রামবাসীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘গরমে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ওঁকে যাঁরা এনেছিলেন, আমরা তাঁদেরই দেহ নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু দেহ সাইকেলে নিয়ে যাওয়ার কথা আমরা কাউকে বলিনি। আমাদের হাসপাতালে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা নেই।’’