এক রাতের মধ্যে ২০-২৫টি অশ্লীল মেসেজও আসত কাউন্সিলরের মোবাইলে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাত হলেই হোয়াটসঅ্যাপে নানা অশালীন মেসেজ পাঠাতেন। সঙ্গে থাকত স্বল্পবসনা মডেলদের ছবিও। এক রাতের মধ্যে ২০-২৫টি অশ্লীল মেসেজও আসত মোবাইলে। বছর ছয়েক আগে এই অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি)-এর এক মহিলা কাউন্সিলর। অভিযোগ ছিল, বিএমসির এক ইঞ্জিনিয়ার তাঁকে ওই মেসেজগুলি করেছেন। দীর্ঘ শুনানির পর ওই মামলায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন মাসের জন্য জেলে পাঠাল মুম্বইয়ের এক আদালত।
মহিলা কাউন্সিলরের গোপনীয়তার অধিকারভঙ্গ করা ছাড়াও অশ্লীলতার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বিএমসির ইঞ্জিনিয়ার নরসিংহ গুড়ে। বছর চল্লিশের ওই বিবাহিত মহিলাকে ‘গুড়িয়া’ বলে সম্বোধন করে রাতবিরেতে নানা অশ্লীল মেসেজ পাঠাতেন তিনি। একটি মেসেজে লেখা, ‘তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ?’ অন্য একটিতে নরসিংহের প্রশ্ন ‘তুমি কি বিবাহিত?’ কখনও বা তিনি লিখেছেন, ‘তোমাকে দারুণ স্মার্ট দেখাচ্ছে।’ আবার একটি মেসেজে তাঁর বার্তা, ‘খুব ফর্সা তুমি। তোমাকে মনে ধরেছে।’ আর একটি মেসেজে নরসিংহ বলেন, ‘আমি ৪০ বছরের... আগামিকাল দেখা হচ্ছে।’
বিচারকের পর্যবেক্ষণ, একের পর এক এ ধরনের হোয়াটসঅ্যাপ করে মহিলার শালীনতা ভঙ্গ করেছেন নরসিংহ। তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে প্রত্যেকের কাছে শ্লীল-অশ্লীলের সংজ্ঞা ভিন্ন। মহিলার শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করার উদ্দেশ্যেই স্বল্পবসনা মডেলদের ভাইরাল ছবি তাঁকে পাঠানো হয়েছিল।’’ আদালতের মতে, এ ধরনের মেসেজের মাধ্যমে ব্যক্তিগত সীমা লঙ্ঘনের অধিকার কারও নেই। নরসিংহের সুআচরণ সত্ত্বেও তাঁর কারাবাসের সাজা মাফ করতে রাজি হয়নি আদালত।
বিএমসির ওই কাউন্সিলর জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ একের পর এক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠাতে থাকেন নরসিংহ। সে রাতে ২০ থেকে ২৫টি মেসেজ করেছিলেন ৪৩ বছরের ওই ইঞ্জিনিয়ার। স্বামীকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি ওই নম্বরে ফোন করলেও নরসিংহ তা ধরেননি। উল্টে নরসিংহর মেসেজ এসেছিল— ‘দুঃখিত, রাতের বেলা ফোনের উত্তর দিই না। হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করাটাই পছন্দের। অনলাইনে এসো।’ এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি।
পুলিশের কাছে মহিলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নরসিংহ। মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর আইনজীবীর দাবি ছিল, নরসিংহের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি হওয়ায় নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্য পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে ভুয়ো মামলায় তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে।