সাত দিনের মধ্যে পর পর তিন বার স্বর্ণ মন্দির এলাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে। ছবি: পিটিআই।
অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরের কাছে আবার বিস্ফোরণ। বুধবার মধ্যরাতে জোর শব্দে কেঁপে উঠল স্বর্ণ মন্দিরের আশপাশের এলাকা। পুলিশ সূত্রে খবর, রাত সওয়া ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে স্বর্ণমন্দির এলাকার শ্রী গুরু রামদাস নিবাসের কাছে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই বলে পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে খবর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় স্থানীয় পুলিশ এবং দমকল।
পুলিশ সূত্রে খবর, হরমন্দির সাহিবের কাছে যে উদ্যান রয়েছে, তার সামনের গলিপথ গালিয়ারায় এই বিস্ফোরণ ঘটে। এই প্রথম বার নয়, সাত দিনের মধ্যে পর পর তিন বার স্বর্ণ মন্দির এলাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে। পুলিশের দাবি, বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল থেকে কিছু লিফলেট পাওয়া গিয়েছে। বোমা ফাটার পর তার অবশিষ্টাংশও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এই বিস্ফোরণগুলির নেপথ্যে কার হাত রয়েছে, তা জানার জন্য তদন্ত নামে পুলিশ। পঞ্জাব পুলিশ ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বর্ণ মন্দিরের কাছে অশান্তি সৃষ্টি করাই তাঁদের লক্ষ্য ছিল।চলতি বছরের ৬ মে স্বর্ণ মন্দিরের কাছে হেরিটেজ সরণিতে প্রথম বিস্ফোরণ হয়। তার ঠিক দু’দিন পর একই এলাকায় আবার বিস্ফোরণের প্রবল শব্দ পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় অশান্তি ছড়ায় পঞ্জাব জুড়ে। ৩৬ দিন পলাতক থাকার পর এপ্রিল মাসে পঞ্জাবের মোগা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহকে। ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, পুলিশের কাছে নিজেই ধরা দিয়েছেন তিনি। পঞ্জাব বা দিল্লিতে কঠোর নিরাপত্তাজনিত জেল থাকা সত্ত্বেও তাঁকে পাঠানো হয়েছে অসমের জেলে। অমৃতপালকে গ্রেফতারির তিন দিন আগে তাঁর স্ত্রী কিরণদীপ কউরকেও অমৃতসর বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
অমৃতপালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বৈষম্য ছড়ানো, খুনের চেষ্টা, পুলিশকে আক্রমণ এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, অমৃতসরের কাছে অঞ্জলা থানার লকআপে বন্দি সঙ্গীকে ছাড়ানোর জন্য কয়েকশো জনকে নিয়ে ১৮ মার্চ হামলা চালিয়েছিলেন অমৃতপাল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী পপ্পলপ্রীত সিংহ। ওই ঘটনার পর থেকেই দু’জন পলাতক ছিলেন। গত ১০ এপ্রিল পপ্পলপ্রীতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কিছু দিন পর আত্মসমর্পণ করেন অমৃতপাল। নিজেকে খলিস্তানি নেতা জার্নেল সিংহ ভিনদ্রেনওয়ালের উত্তরসূরি হিসাবে প্রকাশ্যেই ঘোষণা করতেন অমৃতপাল।
দিন পাঁচেক আগে পাকিস্তানে খলিস্তানপন্থী শীর্ষ নেতাকে পরমজিৎ সিংহ পঞ্জওয়ার ওরফে মালিক সরদারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। খলিস্তান কমান্ড ফোর্স বা কেসিএফ-এর নেতৃত্ব ছিল পরমজিতের হাতে। সব মিলিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে বর্তমান খলিস্তানপন্থীরা চাপে। বর্তমানে স্বর্ণমন্দিরের আশপাশে বারংবার বিস্ফোরণের সঙ্গে এই সব ঘটনার কোনও যোগাযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।