ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বিরোধীরা এক হয়ে যাবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিকে কার্যত নস্যাৎ করে দিলেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, রামধনু জোট আগেও সে ভাবে কাজ করেনি, ২০২৪-এও করবে না।
আজ ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের বক্তব্যে গোড়া থেকেই মমতার আক্রমণের নিশানায় ছিল বিজেপি। দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান মমতা। তিনি দাবি করেন, জনবিরোধী নীতির কারণে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন হবে। মমতার কথায়, ‘‘বিজেপি যাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আর তা হলেই সবাই (বিরোধীরা) এক হয়ে যাবে।’’ যা শুনে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা বলছেন, ‘‘অতীতেও তো এমন প্রচেষ্টা হয়েছিল। লাভ তো কিছু হয়নি। ভোট আসুক! তার পর দেখা যাবে।’’ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এই কথা শুনে ওঁর(মমতার) সমর্থকরাও হাসছিলেন। কিছু দিন আগেও পাঁচ রাজ্যে ভোট হয়েছে, বিজেপি চারটি রাজ্যে জিতেছে।’’
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, তাঁদের রুখতে রামধনু জোট অতীতেও সক্রিয় হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। তাতে লাভ হবে না। তাঁরা মনে করাচ্ছেন, শুধু মমতাই নয়, দ্রৌপদী মুর্মুকে এ যাত্রায় হারাতে প্রবল ভাবে তৎপর হয়ে ওঠেন তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-ও। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অতীতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল এক সময়ে বিজেপিকে রুখতে জোট করেছিলেন। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, সে সব প্রচেষ্টাই বিফল হয়েছে। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে, জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল যে একলা তা ফের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল এখন বুঝতে পারছে জাতীয় রাজনীতিতে তারা কতটা অপ্রাসঙ্গিক। সেই একাকীত্বের যন্ত্রণা থেকে তারা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মাঠে নামতেই চাইল না।’’
অতীতে ২০১৯ সালে বিজেপির ক্ষমতায় আসা রুখতে বিরোধী দলগুলির মধ্যে জোট করার প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু সেই জোটে ভোটের আগেই ভাঙন ধরে। মোদীকে আটকানো তো দূর, উল্টে আরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি। আজ সেই স্মৃতি উস্কে দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কী হয়েছিল তা আমরা সকলেই জানি। মমতা জোট করার চেষ্টা করেছিলেন, উল্টে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি লোকসভা আসন জিতে নেয়।’’ অন্য দিকে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার জোটের প্রচেষ্টাকে ঘিরে বরাবরই সন্দিহান কংগ্রেস বা বামেরা। ওই দলগুলি মমতা বা কেজরীওয়ালের বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়ে গোড়া থেকেই সংশয় প্রকাশ করে এসেছে। দলগুলির মতে, তৃণমূল বা আপ জোট গঠনের নামে বিরোধী শিবিরের ভাঙন ধরিয়ে আখেরে বিজেপির সুবিধে করে দিয়েছে। তবে তৃণমূল সূত্রের মতে, মমতা এ দিন প্রাক-নির্বাচনী রামধনু জোটের কথা সে ভাবে বলেননি। বরং তাঁর বক্তব্য ছিল, বিজেপি একক গরিষ্ঠতা না পেলে ভোটের পরে বিরোধী ঐক্য সহজেই তৈরি হয়ে যাবে।