এই অনলাইন পিটিশনে গুজরাত দাঙ্গার ২১ বছর পরে তা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রকাশের জন্য বিবিসি-র মুণ্ডপাত করা হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
কাল, মঙ্গলবার বিবিসি টেলিভিশনে সম্প্রচার হবে বিজেপিকে ঘোরতর অস্বস্তিতে ফেলা তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এর দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। তার আগে এই সম্প্রচার বন্ধের আর্জি জানিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ভক্তেরা গণস্বাক্ষরের জন্য অনলাইনে পিটিশন দাখিল করল। রবিবার রাতে ব্রিটেনের লিডস-এর অ্যাশ পারমার নামে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত পিটিশনটি প্রকাশ করার পরের ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৬৫০০ জন মানুষ তাতে স্বাক্ষর করেছেন, অনলাইন অধিকার কর্মীদের মতে মোদীর জনপ্রিয়তার নিরিখে যে সাড়া অনেকটাই কম।
এই অনলাইন পিটিশনে গুজরাত দাঙ্গার ২১ বছর পরে তা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রকাশের জন্য বিবিসি-র মুণ্ডপাত করা হয়েছে। পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যে মীমাংসা হয়ে যাওয়া কিছু অভিযোগকে ফলাও করে তুলে আনা হয়েছে ওই তথ্যচিত্রে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। স্বাক্ষরকারীদের দাবি, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এমন একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত বিবিসি-র তথাকথিত নিরপেক্ষ সম্পাদকীয় নীতিরও পরিপন্থী। কেন এবং কী উদ্দেশ্যে হঠাৎ এই তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করা হল, তার নিরপেক্ষ তদন্তও দাবি করা হয়েছে এই পিটিশনে। দাবি করা হয়েছে, দর্শকদের ইচ্ছে করে ভুল তথ্যও পরিবেশন করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রটিতে। দ্বিতীয় অংশটি সম্প্রচার যাতে বন্ধ করা যায়, তার জন্য ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমের উফরে নজর রাখা বেসরকারি নিরপেক্ষ সংস্থা অফকম (দ্য অফিস অব কমিউনিকেশনস)-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে পিটিশনে।
পরশু হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যচিত্রটি বড় পর্দায় দেখানোর পরে হাঙ্গামা করে সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। মঙ্গলবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও ছবিটি দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু ‘শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে’ যুক্তি দেখিয়ে সেই অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রবিবারে পিটিশনটি জনতার দরবারে আনার পরে সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত ৬৫৫৩টি স্বাক্ষর পড়াকে মোদী ভক্তরা বড় করে দেখালেও ভারতের অধিকারকর্মীরা কিন্তু আমল দিতে রাজি নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই অধিকারকর্মীর মতে— বিজেপির তরফে মোদীর জনপ্রিয়তার যে বহর প্রচার করা হয়, তার সঙ্গে এই হিসাব একেবারেই মানানসই নয়। সরকার ও দল যে ভাবে এই তথ্যচিত্রকে মুছে ফেলতে উঠে পড়ে লেগেছে, তাতে স্বাক্ষরের পরিমাণ বহু গুণ বেশি হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন তাঁরা। কিন্তু তা হয়নি।