প্রতীকী ছবি
করোনা, চিন, অর্থনীতি। একের পর এক বিষয় নিয়ে চাপের মুখে রীতিমতো কোণঠাসা নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই অবস্থায় দৃষ্টি ঘোরাতে এ বারে গাঁধী পরিবারকে আক্রমণ শানানোর কৌশল নিয়েই চলতে চাইছে বিজেপি। পাল্টা আক্রমণে নেমে চিনের অনুপ্রবেশের নিন্দা করে প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বার্তা দিতে বলে আজ চাপ আরও বাড়িয়েছে কংগ্রেস।
বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, প্রকৃত সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর কাজে শুধু বিজেপির শীর্ষ নেতা বা মুখপাত্র নন, কাজে লাগানো হচ্ছে দলের তথ্যপ্রযুক্তি শাখাকেও। রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন চিন থেকে টাকা নিয়েছিল বলে গত ক’দিন ধরে সরব ছিল বিজেপি। আজ সংযোজন হয় ব্যবসায়ী মেহুল চোক্সী। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য অভিযোগ করেন, নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই কংগ্রেসকে টাকা দিয়েছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী চোক্সী। মালব্যের সুরেই পরে বিজেপির সভাপতি জে পি নড্ডাও অভিযোগ করেন, মেহুল চোক্সী ও তার আত্মীয় নীরব মোদীর বিরুদ্ধে পিএনবি ব্যাঙ্ক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে দু’জনেই পলাতক। রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনকে অর্থ দেওয়ার বিনিময়ে ইউপিএ জমানায় ব্যাঙ্ক দু্র্নীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল এঁদের। রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চিন ও চোক্সীর সম্পর্ক নিয়ে নড্ডা দশটি প্রশ্নও রাখেন গাঁধী পরিবারের উদ্দেশে।
প্রশ্ন উঠছে, দেশে যখন অতিমারির তাণ্ডব চলছে, চিন ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, তখন হঠাৎ কেন এই ব্যক্তিগত আক্রমণের কৌশল? ভোট তো ২০২৪-এ। কেন এই অসময়ে এমন ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আক্রমণ? বিরোধীদের মতে, কারণ স্পষ্ট। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সরকারের পক্ষে আদৌও স্বস্তিদায়ক নয়। তাই নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের কথায়, ‘‘করোনা থেকে চিন— রাহুল গাঁধী ধারাবাহিক ভাবে সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখায় জবাব দেওয়ার পরিবর্তে অতীতের কাসুন্দি ঘাঁটছে বিজেপি। পাশাপাশি বিরোধীদের কটাক্ষ, নরেন্দ্র মোদী নিজেই তো মেহুল চোক্সীকে ‘মেহুলভাই’ বলে ডাকতেন।
গত কদিনের মতো আজও চিন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার সমালোচনা করে সরব হয়েছে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী যাতে চিনের ভূমিকার সমালোচনা করে মুখ খুলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ করেন, সেই দাবিও তুলেছে দল। পাশাপাশি সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে রাহুল আজ দলের সোশ্যাল মিডিয়া টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। বিজেপির একাধিক নেতার চিন যাওয়ার নজির তুলে ধরে আজ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ২০১৪ সালে অমিত শাহ কেন চিনে দলের প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছিলেন? কেন সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা চিনে গিয়েছিলেন? বিজেপি ও চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে কী সম্পর্ক?