প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্তকুমার হেগড়ে। ছবি- পিটিআই।
মহাত্মা গাঁধীর নেতৃত্বে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ‘বড় নাটক’ বলার জন্য কোনও দুঃখপ্রকাশ করলেন না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে। বরং বললেন, তিনি মহাত্মী গাঁধীর নাম উচ্চারণ করেননি। তোলেননি কোনও রাজনৈতিক দলের কথাও। অথচ তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। দলীয় অসন্তোষের কথা জানানোও হয়েছে অনন্তকুমারকে।
তাঁর মন্তব্য নিয়ে এ দিন তুমুল শোরগোল হয় সংসদে। লোকসভায় অনন্তকুমারের মন্তব্যর তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। বলেন, ‘‘যাঁরা গাঁধীকে অসম্মান করেন, তাঁরা রাবণের সন্তান।’’ ওই মন্তব্যের পর শাসক দল বিজেপির সাংসদরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকায় প্রতিবাদে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস সাংসদরা।
অনন্তকুমার সোমবার বলেছিলেন, ‘‘ব্রিটিশদের সম্মতি ও সমর্থন নিয়ে মহাত্মা গাঁধী স্বাধীনতা সংগ্রামের নামে বড় নাটক করেছিলেন। তিনি বা জওহরলাল নেহরু কেউই পুলিশের লাঠি খাননি এক বারও। তাই স্বাধীনতা সংগ্রাম নিখাদ ছিল না। আন্দোলনটা হয়েছিল ব্রিটিশদের সঙ্গে বোঝাপড়া করে।’’
অনন্তকুমার এ দিন অস্বীকার করতে চাননি তাঁর গত কালের মন্তব্য। বরং বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে আমার মুখে যা বসানো হয়েছে, তা একেবারেই মিথ্যা। তাই আমার মন্তব্য থেকে সরে আসতে রাজি নই। আমি গাঁধী বা কোনও দলের কথা বলিনি। আমি যদি মহাত্মা গাঁধী বা জওহরলাল নেহরু অথবা কোনও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামোল্লেখ করে থাকি, তা হলে সেটা আমাকে দেখানো হোক।’’
আরও পড়ুন- গাঁধীর সংগ্রাম ‘নাটক’, হেগড়ের মন্তব্যে বিতর্ক
আরও পড়ুন- লড়াই যাক গ্রামে শহরে, বার্তা গাঁধী-মিছিল থেকে
বিজেপি সূত্রের খবর, অনন্তকুমারের মন্তব্যে দল খুশি নয়। খুশি নন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মন্তব্যটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে দলের তরফে তীব্র অসন্তোষের কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে।
লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল অহিংস পথে। আর সেটা হয়েছিল মহাত্মা গাঁধীর নীতি মেনেই। গোটা বিশ্বে যিনি পূজিত, সেই গাঁধীকে এখন তাঁর নিজের দেশেই অপমানিত হতে হচ্ছে। যাঁরা এটা করছেন, তাঁরা রাবণের সন্তান। তাঁরা এক জন রামভক্তকে অপমান করছেন।’’