মণিপুর হিংসায় বহু মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
মণিপুর প্রশ্নে রাজ্যসভায় আলোচনার জন্য মধ্যপন্থার প্রস্তাব দিয়েছেন বিরোধীরা। সরকার নীতিগত ভাবে বৃহস্পতিবার তাতে রাজি হওয়া সত্ত্বেও এখনও বিরোধীদের পক্ষ থেকে মণিপুর নিয়ে কোনও নোটিস জমা পড়েনি বলে আজ পাল্টা সরব হল শাসক শিবির। এমনকি বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে আলোচনায় আদৌ আগ্রহী কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আগামী সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশনের শেষ সপ্তাহ। এখনও পর্যন্ত মণিপুর নিয়ে একটি শব্দও আলোচনা সম্ভব হয়নি রাজ্যসভায়। উল্টে দু’পক্ষের অনড় মনোভাবে ভেস্তে গিয়েছে গত দু’সপ্তাহের অধিবেশন। এই আবহে সরকার ২৬৭ ধারায় রাজ্যসভার সব কাজ মুলতুবি করে মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি নয় দেখে, মঙ্গলবার ১৬৭ ধারায় মণিপুর নিয়ে দিনভর আলোচনার প্রস্তাব দেন বিরোধীরা। শাসক শিবিরের দাবি, রাজ্যসভার দলনেতা পীযূষ গয়াল ও কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী ওই প্রস্তাব মেনে নেন।
আজ কেন্দ্রের এক শীর্ষ নেতা জানান, ‘‘বিরোধীদের ওই দাবি মেনে নেওয়া হয়। তাঁদের বলা হয় এ নিয়ে একটি নোটিস জমা দিতে। বিরোধীরা জানান, তাঁদের পাঁচ সদস্যের প্রস্তাব কমিটি ওই নোটিসের খসড়া বানিয়ে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে তা দ্রুত রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দফতরে জমা দেবেন। কিন্তু তার পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কোনও নোটিস জমা পড়েনি।’’ বিরোধীদের ওই গা-ছাড়া মনোভাব দেখে ইন্ডিয়া জোট মণিপুর নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ওই নেতার কথায়, ‘‘এদের লক্ষ্যই হল অধিবেশন ভন্ডুল করে দেওয়া। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয় বিরোধীরা।’’
পাল্টা আক্রমণে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী নেতৃত্বও। সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, অধিবেশনের শেষ দিনে অর্থাৎ ১১ অগস্ট রাজ্যসভায় মণিপুর নিয়ে আলোচনা সম্ভব। কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, কেন শেষ দিনের জন্য ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মণিপুর সংক্রান্ত আলোচনা। এর থেকেই বোঝা যায় সরকার আসলে আলোচনা চায় না। অন্য দিকে শাসক শিবিরের যুক্তি, সোমবার রাজ্যসভায় ছয় ঘণ্টা দিল্লি অধ্যাদেশ বিল নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা আছে। তার পরের তিন দিন লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।
শাসক দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জবাব দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। জবাব দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু যে হেতু অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনায় অমিত শাহ লোকসভায় উপস্থিত থাকবেন, তাই ওই তিন দিন তিনি রাজ্যসভায় কোনও ভাবেই থাকতে পারবেন না। সেই কারণে শুক্রবারকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’’ ওই নেতার আশ্বাস, শুক্রবার মণিপুর নিয়ে আলোচনায় সময় কম পড়লে প্রয়োজনে অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানো হবে।