ফাইল চিত্র।
লক্ষ্য উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ। তাই আগামী ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত মাসাধিক কাল ধরে কাশীকে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশে নানা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আগামী ১৩ ডিসেম্বর কাশীতে সমস্ত বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ‘কাশী বিশ্বনাথধাম করিডর’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশ-বিদেশের ৫১ হাজার স্থান থেকে ওই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। উপস্থিত থাকবেন অন্তত তিন হাজার সন্ন্যাসী ও বিদ্বজনে। আজ এ নিয়ে বিজেপি নেতা তরুণ চুঘ বলেন, ‘‘ওই দিন বারাণসীর সমস্ত মঠ ও মন্দির প্রদীপ দিয়ে সাজানো হবে। ওই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আগামী ১০-১১ ডিসেম্বর বারাণসীর মঠ-মন্দির ও সড়কের সাফাই অভিযানে নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের।’’ মূল অনুষ্ঠানের পরের দিন দলের জেলা ও মণ্ডল সভাপতিদের কাশীতে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে দল। আজ সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘১৪ ডিসেম্বর তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।’’ সূত্রের মতে, মূলত সরকারের সাফল্য তৃণমূলস্তরে পৌঁছে দিতে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত মোদীর। ১৭ ডিসেম্বর কাশীতে দেশের সমস্ত পুরসভার মেয়রদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে কাশী-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে অনুষ্ঠান ও যুব দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। এক মাস ব্যাপী অনুষ্ঠান শেষ হবে মকর সংকান্তির দিন।
মূলত কাশী-বারাণসীকে কেন্দ্র করে এক মাসের ওই অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে হিন্দু ভোটকে বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি বলে মত রাজনীতির অনেকে। কারণ, যে ভাবে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র নেতা অখিলেশ যাদবের সমর্থনে মানুষের ঢল নেমেছে, তা রাজ্য বিজেপির ঘুম কেড়েছে। এসপি সূত্রের দাবি, উত্তরপ্রদেশের ১২ শতাংশ যাদব ও ১৮ শতাংশ মুসলিম ভোট এককাট্টা হয়ে তাদের পক্ষে রয়েছে। জাঠ নেতা জয়ন্ত চৌধরি এসপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচন লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জাঠদের বড় অংশের ভোট বিজেপির বিরুদ্ধে যাওয়ার সম্ভাবনা। বিজেপির একাংশের মতে, কৃষি আইন দেরি করে বাতিল হওয়ায় বিশেষ লাভ হবে না দলের। তাই ভোট বৈতরণী পার হতে বিজেপির একমাত্র ভরসা মেরুকরণের রাজনীতি। সেই হাওয়া তুলতেই কাশীকে বেছে নিয়েছেন মোদী ও তাঁর সঙ্গীরা।