প্রতীকী ছবি।
হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে নজরদারি নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা রুখতে মরিয়া চেষ্টা করেও আজ ব্যর্থ হলেন বিজেপি তথা এনডিএ সাংসদেরা। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হবে কি না, তা নিয়ে দু’ঘণ্টার তীব্র বাদানুবাদ চলে। তার পরে নজিরবিহীন ভাবে ভোটাভুটি হয়। অপ্রত্যাশিত ভাবে সেই ভোটাভুটিতে ড্র হয়ে যায়। আলোচনার বিরুদ্ধে ১২টি ভোট পড়ে। আলোচনার দাবি তুলে বিরোধী শিবির থেকেও ১২টি ভোট পড়ে।
সূত্রের খবর, শিবসেনার সাংসদ আলোচনার পক্ষে ভোট দেন। ড্র হয়ে যাওয়ায় কমিটির চেয়ারম্যান শশী তারুর নিজের ‘কাস্টিং ভোট’ প্রয়োগ করে আলোচনার পক্ষে ভোট দেন।
ইজ়রায়েলি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার তৈরি পেগেসাস স্পাইওয়্যার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সেলফোনে ছড়িয়ে এ দেশের বেশ কয়েক জন রাজনীতিক, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, দলিত আন্দোলনের নেতাদের সেলফোনে আড়ি পাতার চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার ফোনেও আড়ি পাতা হয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন ছিল, মোদী সরকারই ইজ়রায়েলি সংস্থাকে দিয়ে আড়ি পাতাচ্ছিল না তো? কারণ ইজ়রায়েলের ওই সংস্থা জানিয়েছিল, তারা শুধু মাত্র সরকারি নিরাপত্তা সংস্থার হয়েই কাজ করে।
আরও পড়ুন: ভুল হচ্ছে সাংসদদেরও, নামে বদল চিট ফান্ডের
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আজ যে এ বিষয়ে আলোচনা হবে, তা আগে থেকেই ঠিক ছিল। স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্তাদেরও ডাক পড়েছিল। কিন্তু বেলা তিনটেয় বৈঠক শুরু হতেই বিজেপি ও এনডিএ সাংসদেরা আপত্তি তুলে জানান, এটি নিরাপত্তার বিষয়। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির এক্তিয়ারে এই বিষয়টি পড়ে না। পাল্টা যুক্তিতে অনড় থাকেন কংগ্রেস ও অন্যান্য দলের সাংসদেরা।
সাধারণত স্থায়ী কমিটিতে ঐকমত্যের মাধ্যমেই যে কোনও বিষয় ঠিক হয়। ভোটাভুটির নিয়ম থাকলেও তা কার্যত নজিরবিহীন। কিন্তু দু’ঘণ্টার তর্কবিতর্কেও ফয়সালা না হওয়ায় ভোটাভুটি হয়। এক প্রবীণ সাংসদ বলেন, ‘‘সংসদীয় কমিটিতে ভোটাভুটি নজিরবিহীন। বিজেপি আজ সেই ভোটাভুটি
করাল।’’ ভোটাভুটিতে আলোচনা হবে বলে ঠিক হওয়ায় বাইরে দু’ঘণ্টা ধরে অপেক্ষমাণ অফিসারদের ডাক পড়ে। তত ক্ষণে কমিটি রুমের বাইরে অপেক্ষা করতে করতে ফিরে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা। অন্য অফিসারদের ডেকে আরও দু’ঘণ্টা বৈঠক চলে। সূত্রের খবর, অফিসারেরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নজরদারির বিষয়ে সরকারের ভূমিকার কথা অস্বীকার করেন।
আজ লোকসভাতেও এক প্রশ্নের উত্তরে মোবাইলে নজরদারিতে সরকারের ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ-কে কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।