BJP

বড় বদল সংগঠনে, যোগীর রাজ্যে ভোট প্রস্তুতি বিজেপির

পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধান পরিষদের সদস্য সুভাষ যদুবংশকে। মূলত ওই এলাকার ওবিসি ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই যদুবংশকে ওই পদে আনা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:১৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। ২০২৪ সালে দিল্লিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে তাই উত্তরপ্রদেশে সাংগঠনিক পর্যায়ে বড় মাপের রদবদল ঘটালেন বিজেপি নেতৃত্ব। জাতপাতের সমীকরণের কথা মাথায় রেখে আজ এক ধাক্কায় রাজ্যের ৯৮ জন জেলা সম্পাদককে পাল্টে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় দল। তেমনই সাংগঠনিক ভাবে নজর রাখার জন্য গোটা উত্তরপ্রদেশকে ছ’টি ভাগে ভাগ করেছে বিজেপি। যে সব এলাকার দায়িত্বে রাজ্য সম্পাদক স্তরের নেতারা থাকেন বদল হয়েছে সেখানেও।

Advertisement

লোকসভায় উত্তরপ্রদেশের ভাল ফলের উপরে দিল্লিতে ক্ষমতা দখল অনেকটাই নির্ভর করে থাকে। গত দুই লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি আশাতীত ভাল ফল করায় দিল্লি দখল অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর কাছে। সম্প্রতি কর্নাটকে হার, পাঁচ রাজ্যের দলের ভাল ফল না হওয়ার আশঙ্কা চিন্তায় রেখেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে। তাই উত্তরপ্রদেশে যাতে আসন্ন লোকসভাতেও নজরকাড়া সাফল্য আসে তাই এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। দিন দশেক আগে পাঁচ রাজ্যের ভোট পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডারা। সেখানে পাঁচ রাজ্য ছাড়া আলাদা করে উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের মতে, জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি ধীরে ধীরে গোটা দেশে জোরালাে পাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ তার ব্যতিক্রম নয়। সেখানেও জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছেন সপা নেতা অখিলেশ যাদব। তাই উত্তরপ্রদেশের জাতপাতের রাজনীতির বিষয়টি মাথায় রেখেই আজ দলে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, ‘‘আসন্ন নির্বাচনের দলীয় রণকৌশলের অঙ্গ হিসেবেই অঞ্চল ও জেলাভিত্তিক ওই পরিবর্তন করা হয়েছে। দল এ যাত্রায় উত্তরপ্রদেশের আশিটি লোকসভায় জেতার লক্ষ্য নিয়ে নামতে চলেছে।’’

পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধান পরিষদের সদস্য সুভাষ যদুবংশকে। মূলত ওই এলাকার ওবিসি ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই যদুবংশকে ওই পদে আনা হয়েছে। বস্তি জেলার বাসিন্দা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার যদুবংশ জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন দলের ওবিসি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধানের হাত ধরেই। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষিবহুল এলাকায় যাদব ভোট, যারা মূলত সপা-র ভোটার তাঁদের কাছে টানতেই যদুবংশীয় ওই নেতাকে এলাকায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তেমনই বুন্দেলখণ্ড-কানপুর এলাকার দায়িত্ব পেয়েছেন অনুপ গুপ্ত। তিনি আগে ব্রজ এলাকার দায়িত্বে ছিলেন। মূলত বৈশ্য সমাজের নেতা অনুপকে কানপুর-বুন্দেলখণ্ডে উপস্থিত বৈশ্য সমাজের ভোটকে নিশ্চিত করতেই ওই এলাকার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। অবধ অঞ্চল দেখার দায়িত্ব পেয়েছে সঞ্জয় রাই। বিজেপি শাসনে ওই এলাকায় উচ্চবর্ণের মধ্যে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসন করতেই উচ্চবর্ণের ওই নেতাকে ওই এলাকার দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিগত কিছু সময় ধরেই রাজপুত
সমাজ বিজেপির উপরে বেশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের বার্তা দিতেই ব্রজ এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সহ-সভাপতি তথা রাজপুত নেতা সন্তোষ সিংহকে। কাশী এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অমরপাল মৌর্যকে। কাশী-বারাণসী এলাকার উঁচু জাতের ভোট দীর্ঘ সময় ধরেই বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকার মূলত সমাজের পিছিয়ে থাকা শ্রেণির ভোট নিশ্চিত করতেই নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ অমরপালকে বেছে নিয়েছে দল। গোরক্ষপুর এলাকার দায়িত্ব পেয়েছেন গোবিন্দ নারায়ণ শুক্ল। সূত্রের মতে, মূলত ব্রাহ্মণ ভোট কাছে টানার লক্ষ্যেই শুক্লকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের মতে, রাজ্য রাজনীতিতে শুক্লের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ নয় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। ফলে ওই নিয়োগে গোরক্ষপুর এলাকায় বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্বের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না বিজেপির একাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement