তিন দশকের জুটি। ফাইল চিত্র
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া মোদীর ২০ বছর পূর্তি নিয়ে বইয়ে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ‘মোদি অ্যাট টোয়েন্টি: ড্রিমস মিট ডেলিভারি’ শীর্ষক বইতে আরও অনেকের সঙ্গেই লিখেছেন শাহ। লেখকের তালিকায় রয়েছেন সুধা মূর্তি থেকে সদগুরু, নন্দন নিলকেনি থেকে লতা মঙ্গেশকর-সহ অনেকেই। তবে ‘মোদী-শাহ’ জুটির শাহর লেখাই সবচেয়ে বেশি আলোচ্য। আরও বেশি করে এই বইকে শাহ বর্ণনা করেছেন বিজেপি কর্মীদের কাছে ‘গীতা’ বলে।
বুধবার বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছেন উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। আর সেখানে উপস্থিত হয়েই এই বই আগামী দিনে দলের কর্মীদের কাছে গীতা হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন শাহ। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘গরীব পরিবারের সন্তান থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠা নরেন্দ্র মোদীকে জানতে হলে আগে জানতে হবে তাঁর জীবনের প্রথম ৩০ বছরের কথা।’’ নিজের লেখায় অবশ্য প্রথম ৩০ বছরের তুলনায় রাজনীতিক মোদী সম্পর্কেই বেশি লিখেছেন শাহ।
লিখেছেন একেবারে আলাপ হওয়ার সময়ের কথা। জানিয়েছেন ১৯৮৭ সালে আমদাবাদ পুরসভা নির্বাচনের সময়ে গুজরাতের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)-এর দায়িত্ব নিয়ে এসে কী ভাবে কাজ করতে বলেছিলেন মোদী। কেন্দ্রে এবং গুজরাতে কংগ্রেস যখন বড় শক্তিধর তখন কী ভাবে বড় লক্ষ্য নিতে হবে, কী ভাবে পরিকল্পনায় গুরুত্ব দিতে হবে। তখন বিজেপির আমদাবাদ নগর সম্পাদক শাহ কী ভাবে মোদীর কাছে রাজনীতির পাঠ নিয়েছিলেন তার বর্ণনা করেছেন নিজের লেখায়। জানিয়েছেন, আড়াল থেকে মোদীর নেতৃত্বেই সে বার পুরসভা দখল করতে পেরেছিল বিজেপি।
তারও ১০ বছর পরের কথাও লিখেছেন শাহ। ১৯৮৮ সালে গুজরাতে বিজেপি সদস্য সংগ্রহ অভিযান করেছিল। মোদীর পরামর্শেই নাকি নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সংগঠন পরব’। শাহ জানিয়েছেন মোদী শিখিয়েছিলেন কী ভাবে সংগঠন বিস্তারের কাজকে উৎসবের রূপ দিতে হয়। সদস্যদের নাম কী ভাবে নথিভুক্ত করা হবে এবং তা যাতে জেলা এবং মহকুমা স্তরেও যাচাই করা যায় সে নির্দেশও মোদীই দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন শাহ। সেই ‘পরব’ উপলক্ষে মোদীর সঙ্গে গুজরাতে জেলায় জেলায় সফরের অভিজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি লিখেছেন অন্য গল্পও। সেই সময়ে শাহকে মোদীর পরামর্শ ছিল, প্রত্যেক গ্রামেই দু’জন প্রধান রাজনীতিক পাওয়া যাবে। যিনি জয়ী তিনি নিশ্চিত ভাবেই থাকবেন কংগ্রেস বা জনতা দলের শিবিরে। পরাজিত এবং কিছুটা পিছনের সারিতে থাকা ব্যক্তিকেই নিয়ে আসতে হবে বিজেপিতে। শাহ লিখেছেন, মোদী চেয়েছিলেন সব গ্রামের ‘রানার আপ’ বিজেপির সদস্য হোন।
ভারতীয় রাজনীতিতে গত এক দশকে কাছাকাছি থাকা দুই রাজনীতিকের নাম বলতে হলে সবার আগেই আসে মোদী ও শাহর নাম। সেই শাহর লেখায় মোদীর ১৩ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময় থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরের নানা খুঁটিনাটি উঠে এসেছে। মোদীর দর্শন থেকে কাজের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি শাহ জানিয়েছেন তাঁর ‘নরেন্দ্রভাই’ দলকে আসলে ‘মা’ মনে করেন।