ফাইল চিত্র।
অসন্তোষ দীর্ঘদিন ধরে পুঞ্জীভূত হচ্ছিলই। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর তা এখন প্রকাশ্যে। উত্তরপ্রদেশের গ্রামে গ্রামে হাহাকারের শব্দ মুছতে রাজ্য বিজেপি তথা যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যোগীর নিজের রাজনৈতিক অবস্থান গত বিধানসভা ভোটের মতো শক্তপোক্ত নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্যের বিরোধী দলগুলির পারস্পরিক যুযুধান পরিস্থিতি বিজেপিকে অনেকটাই সুবিধা করে দিচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
উত্তরপ্রদেশের অন্যতম বিরোধী নেত্রী এবং দলিতদের প্রধান মুখ মায়াবতী কার্যত বিজেপির দ্বিতীয় দল হিসেবে কাজ করছেন, গত দু’বছর ধরে এই অভিযোগ ছিলই। বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে, বিজেপিকে আক্রমণ না করে বিএসপি নেত্রী লাগাতার তোপ দাগছেন বিজেপিরই প্রধান প্রতিপক্ষ অখিলেশের দিকে। আজও তিনি জানিয়েছেন, ‘এসপি ছোট ছোট দলগুলিকে নিয়ে বিধানসভায় লড়বে বলে জানিয়েছে, সেটা আসলে তাদের অসহায়তাকেই তুলে ধরেছে।’ তিনি নিজে কোনও জোট না করে একা লড়বেন এবং তার ফলে বিরোধী ভোট ব্যাঙ্ক কিছুটা হলেও ভাগ হবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের শক্তি খুবই দুর্বল, কিন্তু যে সামান্য ভোট তাদের রয়েছে, তার চরিত্র এসপি এবং বিএসপির ভোটব্যাঙ্কের সঙ্গে একই। ফলে বিভিন্ন আসনে কংগ্রেস প্রার্থীরা অল্প সংখ্যক ভোট পেলেও, তাতে দুর্বল হবেন অখিলেশই।
এই চারমুখী লড়াইয়ের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভ যাতে বিজেপি তুলতে পারে, তার জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না যোগী আদিত্যনাথ। সূত্রের মতে, এ বারের লড়াই তাঁর কাছে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইও বটে।
বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, এপ্রিল মাসের পঞ্চায়েত ভোটে ধাক্কা খেয়ে একদিকে ভালই হয়েছে দলের পক্ষে। কোনও ভ্রান্ত আত্মতুষ্টির জায়গা আর থাকছে না। বরং অনেকটা সময় পাওয়া যাচ্ছে রাজ্যবাসীর ক্ষোভ নিরসনের। বিজেপির তিন শীর্ষ স্তরের রাজ্য নেতা গোটা রাজ্যের ব্লকে ব্লকে ঘুরে জনসংযোগ করছেন। পাশাপাশি সামনেই জেলা পঞ্চায়েত অধ্যক্ষ নির্বাচনের আগে জাতপাতের রাজনীতিতে ভারসাম্য আনার জন্য কাজ করছে দল। যে ভাবে ওই ভোটের জন্য প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে, তার থেকে স্পষ্ট, সমস্ত জাতপাতের প্রতিনিধিত্ব রাখাটাই উদ্দেশ্য। পূর্ব উত্তরপ্রদেশে বিজেপি জেলা অধ্যক্ষ পদে প্রার্থী পদে রয়েছেন ব্রাহ্মণ, ঠাকুর, নিষাদ, দলিত— সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। আবার বুলন্দশহর, মেরঠ বা গৌতম বুদ্ধনগরে দেওয়া হয়েছে জাঠ প্রার্থী। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে কৃষক আন্দোলনের কারণে উত্তপ্ত এবং জাঠ মন জয় করাটা অগ্রাধিকার বিজেপির।