মধ্যপ্রদেশ নিয়ে রাহুলের ‘কল্পনাবিলাস’কে কটাক্ষ করল বিজেপি। ফাইল চিত্র।
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ১৫০টি আসন জিততে চলেছে বলে দাবি করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওয়েনাড়ের প্রাক্তন সাংসদের বক্তব্যের পাল্টা দিল বিজেপিও। তাদের তরফে দলের পুরনো স্লোগান ধার করে বলা হয়েছে, ‘মধ্যপ্রদেশে এ বার বিজেপি ২০০ পার’।
সোমবার মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে ছিলেন রাহুল গান্ধীও। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাহুল দাবি করলেন, মধ্যপ্রদেশে ১৫০টি আসনে জিততে চলেছে কংগ্রেস। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, কর্নাটকে আশাতীত সাফল্যের পরে কংগ্রেসের তরফে ভোটমুখী রাজ্যগুলির কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে রাহুলের কথায়।
তারপরই রাহুলের ‘কল্পনাবিলাস’ নিয়ে কংগ্রেস নেতাকে কটাক্ষ করেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। মির্জা গালিবকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “আপন খেয়ালে তুমি নানা জল্পনাকল্পনা করে যেতেই পারো।” রাহুলের দাবির যে কোনও সারবত্তা নেই, নিজের মন্তব্যে তারই ইঙ্গিত দেন মধ্যপ্রদেশ রাজনীতির ‘মামা’। নরেন্দ্র মোদী সরকারের ৯ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে মধ্যপ্রদেশের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিবরাজ। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে কংগ্রেসের দাবি উড়িয়ে দেন শিবরাজ। তিনিও জানান, ২০০ আসনে জয়ী হতে চলেছে বিজেপি।
সোমবার রাহুল বলেন, “আমরা কর্নাটকে ১৩৬টি আসন পেয়েছিলাম। মধ্যপ্রদেশে আমরা ১৫০টি আসন পেতে চলেছি।” ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় কংগ্রেস ১৫০টি আসন পেলে একক নিরঙ্কুশ দল হিসাবে ক্ষমতায় আসবে তারা। চলতি বছরেই নির্বাচন হবে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং তেলঙ্গানায়। রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। সেখানে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য লড়বে তারা। তেলঙ্গানায় তাদের লড়াই বিআরএস-এর সঙ্গে। মধ্যপ্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার জেরে জয়ের আশা দেখছে কংগ্রেস।
২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমলনাথ। কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্যের জেরে কিছু বিধায়ক দল ছাড়েন। সিন্ধিয়া অনুগামী বলে পরিচিত ওই বিধায়করা বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। পড়ে যায় কংগ্রেস সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হন শিবরাজ সিংহ চৌহান— যিনি প্রায় দু’দশক ধরে মধ্যপ্রদেশের কুর্সিতে রয়েছেন। তত দিনে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সিন্ধিয়াও। এ বার দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রাশ টেনে জয়ের আশা দেখছে কংগ্রেস। কর্নাটকের ‘জনমুখী’ ইস্তাহার মধ্যপ্রদেশেও পেশ করার পরিকল্পনা করেছে তারা। তবে কমলনাথের নেতৃত্বেই কংগ্রেস আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়বে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সোমবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান রাহুল।