কোচির একটি হোটেলে খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার। পিটিআই।
দু’দিনের কেরল সফরে এসে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস-সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, তাঁর সরকার সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিশ্বাসী। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এ বারের কেরল সফরে প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেছেন অন্তত আট জন বিশপের সঙ্গে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই দক্ষিণী রাজ্যে খিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছতেই এই উদ্যোগ।
আজ তিরুঅনন্তপুরমের সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশন থেকে পতাকা দেখিয়ে কেরলে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরনে ছিল কেরলের চিরাচরিত পোশাক ধুতি (মুন্ডু), কুর্তা ও শাল। সকাল ১১টা ১০ মিনিটে ট্রেনের উদ্বোধন করেই তাতে উঠে পড়েন তিনি। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সি-১ কামরায় পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতা মিলিত হন মোদী। উপস্থিত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান এবং কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুশি পড়ুয়ারা।
বন্দে ভারতের উদ্বোধনের পরে পালায়মে সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি ২ হাজার ৩৩ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতামূলক উন্নয়নে বিশ্বাস করে। রাজ্যগুলির উন্নয়নের অর্থ দেশের উন্নয়ন। কেরলের উন্নয়ন মানে ভারতের দ্রুত উন্নয়ন।’’ দাদরা ও নগর হাভেলিতে মোদী নমো হাসপাতালের উদ্বোধন করেছেন আজ। সেখানে তাঁর দাবি, বিগত সরকার প্রকল্প রূপায়ণে দেরি করত। কিন্তু তাঁর সরকার দেশে নতুন কর্মসংস্কৃতির সূচনা করেছে।
কেরলে কোচি ওয়াটার মেট্রো-সহ জেলাস্তরের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মোদী। দেশের প্রথম ডিজিটাল সায়েন্স পার্কের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘কেরল ইউনিভার্সিটি অব ডিজিটাল সায়েন্সেস ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি’ সংলগ্ন ১৪ একর জমির উপর এই পার্কটি তৈরি হবে। দু’বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে বলে স্থির হয়েছে।
মোদীর কেরল সফরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তাঁর টুইট, ‘২০১৬ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী সোমালিয়ার সঙ্গে কেরলের তুলনা করেছিলেন। আর গত দু’দিন ধরে ধুতি পরে কেরলবাসীকে তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন। সাত বছর আগের সেই তুলনার জন্য কি তিনি দুঃখ প্রকাশ করবেন’?
রাজনৈতিক ভাবে কেরলে বিজেপি এখনও তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। রাজ্যের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছতে তারা চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না। দু’দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী আট জন বিশপের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।