প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। নয়াদিল্লিতে বুধবার। নিজস্ব চিত্র
নরেন্দ্র মোদী সরকারের আট বছরের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিল বিজেপ। ঠিক হয়েছে, আগামী ৩০ মে থেকে ১৫ জুন— ওই দু’সপ্তাহে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গ্রামগুলিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা আমজনতা পাচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা। পাশাপাশি,দলের পক্ষে অপেক্ষাকৃত দুর্বল বুথগুলি শক্তিশালী করার জন্য যেমন দলীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনি জঙ্গি মোকাবিলা করতে গিয়ে হত সেনা ও আধাসেনার পরিবারের সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দলীয় কর্মীদের সামনে রেখেছে পদ্ম শিবির।
দু’বছর পরেই লোকসভা নির্বাচন। তৃতীয়বার দিল্লির মসনদ দখল করতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। তাই কার্যত এখন থেকেই নির্বাচনে জেতার প্রস্তুতি শুরুকরে দিয়েছেন তাঁরা। আজ দলীয় দফতরে দলের পদাধিকারী, সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ‘বুথ স্বশক্তিকরণ অভিযানে’র সূচনা করেন বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা। যে অভিযানের অঙ্গ হিসাবে আজ দেশের ৭৩-৭৫ হাজার বুথ যেগুলিতে বিজেপি অপেক্ষাকৃত দুর্বল, সেগুলিতে জনভিত্তি বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে দল। ২০১৪সালের লোকসভার দু’বছরের মাথায় পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, ওড়িশার মতো রাজ্যে ঠিক এ ভাবেই বুথ শক্তিশালী করার কাজে হাত দিয়েছিল দল। ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় হাতেনাতে তার ফল পেয়েছিল বিজেপি। এ বারও তাই দু’বছর আগে থাকতেই বুথে জনসমর্থন বাড়াতে নেমে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।
এ ছাড়া আগামী দু’সপ্তাহ দেশ জুড়ে ‘সেবা-সুশাসন ও গরিব কল্যাণ’— এই থিমে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রের প্রধান শাসকদল। কেন্দ্রের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প থেকে যাঁরা লাভবান হয়েছেন, সেই সব মানুষের বাড়িতে গিয়ে তাঁদেরসঙ্গে আলাপচারিতা করা, প্রকল্পের সুফল তাঁরা পাচ্ছেন কি না সে বিষয়ে কথা বলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের। বলা হয়েছে, প্রতিটি বুথে অন্তত ৭৫ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পকে কী ভাবে আরও উন্নত ও জনমুখী করা যায় সেই ‘ফিডব্যাক’ আমজনতার কাছে থেকে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সাংসদ ও মন্ত্রীদের। মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার জন্য মন্ত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে নিজেদের এলাকার কোনও গ্রামে রাত্রিবাস করতেও নির্দেশ দিয়েছে দল। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, চার রাজ্যের নির্বাচনের সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট, মূলত সরকারি প্রকল্পের ফায়দা যারা পেয়েছেন তারা ঢেলে ভোট দিয়েছেন দলকে। তাই লোকসভা ভোটের আগে জনমুখী প্রকল্পকে আরও ভাল ভাবে ও আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তৎপর হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারে দল।