দিলীপ রায়। — ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানাতেই ২০২০ সালে কয়লা ব্লক বণ্টন দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁর তিন বছর জেলের সাজা হয়েছিল। গত ২১ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টে সেই সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরেই ওড়িশার সেই বিতর্কিত নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দিলীপ রায়কে প্রার্থী করল বিজেপি।
লোকসভা ভোটের পাশাপাশি ওড়িশায় বিধানসভা ভোট হচ্ছে। সেখানকার শিল্পশহর রৌরকেলা বিধানসভা আসনে টিকিট দেওয়া হয়েছে দিলীপকে। একদা বিজেপি প্রধান নবীন পট্টনায়েকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন দিলীপ। বিজেডির সাংসদ হিসাবে নব্বইয়ের দশকে প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারের কয়লা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বিজেডি তখন বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে ছিল।
১৯৯৯ সালে ঝাড়খন্ডে কয়লা ব্লক বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল দিলীপের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় স্তরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। তৎকালীন এনডিএ সরকার ওই অভিযোগের তদন্তভার দিয়েছিল সিবিআই-কে। কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারী সংস্থা তদন্তে নেমে ওই দুর্নীতিতে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী দিলীপের যোগসাজশ খুঁজে পায়। তাঁকে সে সময় গ্রেফতারও করা হয়েছিল। দীর্ঘ শুনানির পর ২০২০-র অক্টোবরে দিলীপ-সহ চার জন ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। দিল্লির একটি আদালত তাঁকে তিন বছর জেলের সাজা দিয়েছিল।
দুর্নীতি দমন আইনের বিভিন্ন ধারার পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল দিলীকে। যার অর্থ, সরকারি পদাধিকারী হয়ে বিশ্বাসভঙ্গ। যা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। দিলীপের জন্য কারাদণ্ড ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক জানিয়েছিলেন, মন্ত্রী থাকাকালীন দিলীপ বেআইনি এবং অসৎ ভাবে বেসরকারি এবং পরিত্যক্ত কয়লাখনি এলাকা একটি বিশেষ সংস্থাকে পাইয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে ব্রহ্মডিহা কয়লা ব্লক বণ্টনে ওই ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছিল।
পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী, ৭১ বছরের দিলীপ অবশ্য তার বেশ কয়েক বছর আগেই নাম লিখিয়েছিলেন বিজেপিতে। ২০১৪ সালে ওড়িশার বিধানসভা ভোটে রৌরকেলা থেকে ‘পদ্ম’ প্রতীকে জয়ীও হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯-এ ভোটে দাঁড়াননি তিনি। সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু গত ২১ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের রায়ের পরেই ‘সক্রিয়’ হয়ে ওঠেন তিনি। বিজেপির টিকিট পাওয়ার পরে এক্স হ্যান্ডলে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দিলীপ লিখেছেন, ‘‘মোদীজির সুযোগ্য নেতৃত্বে কেন্দ্রে আবার ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি। জয়ী হবে ওড়িশায় বিধানসভা ভোটেও।’’